ঢাকামঙ্গলবার , ৭ অক্টোবর ২০২৫
  • অন্যান্য

আজকের সর্বশেষ সবখবর

সমুদ্রপথে ইতালি পৌঁছানো অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ৭, ২০২৫ ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ । ১৫১ জন

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪৭৬ জন বাংলাদেশি অভিবাসী সমুদ্রপথে ইতালির উপকূলে পৌঁছেছেন। এই সংখ্যা চলতি বছর ইতালিতে আগত দেশগুলোর অভিবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ।

শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর ইতালি উপকূলে আসা মোট অভিবাসীর সংখ্যা গত দুই বছরের তুলনায় কমেছে। তবে বাংলাদেশিদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে ।

২০২৫ সালে ইতালিতে মোট ৫১ হাজার ৮৫৫ জন অভিবাসী এসেছেন, যা ২০২৪ সালের ৫১ হাজার ৩৪১ জনের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৯ জনের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু এই সামগ্রিক হ্রাসের মধ্যেও বাংলাদেশিদের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

২০২৪ সালে ৮ হাজার ৫২৬ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে এসেছিলেন। এ বছর তা বেড়ে ১৫ হাজার ৪৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে এ বছর ইতালিতে আগত মোট অভিবাসীর প্রায় ৩০ শতাংশই বাংলাদেশি, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ অংশীদারিত্ব।

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিবেদনটি ইঙ্গিত করছে, ভূমধ্যসাগর হয়ে দেশটিতে অভিবাসন প্রবাহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটছে। আফ্রিকান দেশগুলোর তুলনায় এখন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসীর আগমন ক্রমেই বাড়ছে৷

বাংলাদেশের পর সর্বাধিক সংখ্যক অভিবাসী এসেছে ইরিত্রিয়া ও মিশর থেকে৷ এই সংখ্যা যথাক্রমে ৭ হাজার ৯০ জন ও ৬ হাজার ৫৫৮ জন। এছাড়াও পাকিস্তান, সুদান, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও টিউনিশিয়া থেকেও কয়েক হাজার মানুষ এ সময় ইতালিতে পাড়ি জমিয়েছে। অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ইরান, সিরিয়া, গিনি, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া, মালি ও আফগানিস্তান। আরও কিছু অভিবাসীর পরিচয় যাচাইয়ের কাজ এখনো চলমান।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টিই ছিল অভিবাসনের প্রধান মৌসুম। মে মাসে ৭ হাজার ১৭৮ জন, জুনে ৭ হাজার ৮৯ জন, জুলাইয়ে ৬ হাজার ৪৮৭ জন, আগস্টে ৬ হাজার ১৪৬ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩১৫ জন অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছান। অক্টোবরের প্রথম দিক পর্যন্ত আগমন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে, অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক একক অভিবাসীর সংখ্যাও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ১৫৬ জন শিশু ইতালিতে পৌঁছেছে, যা গত বছরের ৮ হাজার ৭৫২ জনের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের ১৮ হাজার ৮২০ জনের তুলনায় অনেক কম।

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপীয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর হলেও বাংলাদেশের অভিবাসন প্রবাহে তা তেমন প্রভাব ফেলেনি। বরং দক্ষিণ এশীয় অভিবাসনের নতুন ধারা ইতালির ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস