বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের মধ্যে স্পেশাল রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড (বিশেষ সম্মাননা) ২০২৫ অর্জন করেছেন একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক সুশান্ত সিনহা। সাংবাদিকতার মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ও ধারাবাহিক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এই আন্তর্জাতিক সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সাংবাদিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মান অর্জন করলেন।
আজ বুধবার (১৮ জুন ২০২৫) সকালে বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র কার্যালয়ে তাঁর হাতে সম্মাননা হস্তান্তর করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র প্রতিনিধি ডা. আহমেদ জামশীদ মোহামেদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র ডেপুটি রিপ্রেসেন্টাটিভ ড. রাজেশ নারওয়াল ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র প্রতিনিধি ডা. আহমেদ জামশীদ মোহামেদ বলেন, “তামাক নিয়ন্ত্রণসহ জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সাংবাদিক, গবেষক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভবিষ্যতে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। সুশান্ত সিনহার প্রতিবেদনে যেমন সাহসিকতা ছিল, তেমনি তামাক নিয়ন্ত্রণে তাঁর এভিডেন্স-বেইজড সাংবাদিকতা বাংলাদেশের নীতিনির্ধারণে বড় প্রভাব রেখেছে। এই সম্মান তারই স্বীকৃতি।”
এসময় জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান বলেন, “অনেক সাংবাদিকই তামাক নিয়ে প্রতিবেদন করেন, তবে সুশান্ত সিনহা অনুসন্ধান ও গবেষণার সমন্বয়ে যে প্রতিবেদনগুলো করেছেন, তা তামাক নিয়ন্ত্রণে এক বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তাঁর অর্জন শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটি বাংলাদেশের সম্মান।”
পুরস্কার গ্রহণ করে সুশান্ত সিনহা বলেন, “এই অর্জন আমার একার নয়—একাত্তর টেলিভিশনের, যারা তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি, নীতিনির্ধারণে হস্তক্ষেপসহ নানা বিষয় নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিবেদন প্রচারের সুযোগ দিয়েছেন। তাঁদের সহায়তা ছাড়া ডব্লিউএইচও’র এই রিজিওনাল অ্যাওয়ার্ড পাওয়া সম্ভব হতো না। বিশেষ করে বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিগুলোর মুখোশ উন্মোচনে একাত্তর টেলিভিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।”
সুশান্ত সিনহা কুষ্টিয়ার ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কারখানায় শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন, ন্যায্য মজুরি দাবি এবং তামাক কোম্পানির অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনসচেতনতা ও নীতিগত পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছেন।
তামাক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অবদান রাখায় ২০২৩ ও ২০২৫ সালে তাকে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসের পুরস্কার দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে কুষ্টিয়ার ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কারখানায় শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন, ন্যায্য মজুরি দাবি নিয়ে করা ধারাবাহিক প্রতিবেদনের জন্য সেরা প্রতিবেদকের পুরস্কার দিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়।