দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। ইতোমধ্যে প্রাক-বাজেট মত বিনিময় সভায় অন্যান্যদের মতো তামাক নিয়ন্ত্রণের সংগঠন এবং বিড়ি-সিগারেট উৎপাদক কোম্পানিগুলো বৈঠক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাথে। তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত সংস্থাগুলো নিজেদের বেশকিছু লিখিত প্রস্তাব এনবিআরের কাছে তুলে ধরেছে। আন্তর্জাতিকভাবেও অর্থনীতিবিদসহ তামাক কর বিশেষজ্ঞরাও প্রস্তাব দিয়েছেন। বাংলাদেশের এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশকিছু করণীয় তুলে ধরা জরুরি। কারণ আপত দৃষ্টিতে তামাকজাত দ্রব্যের কর কাঠামোর প্রস্তাব শুনতে বা দেখতে সুন্দর মনে হলেও বড় ধরনের শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। এমনকি এনবিআর যদি তামাক নিয়ন্ত্রণের কর্মীদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে তাহলে সরকারের রাজস্ব আয় ২০ হাজার কোটি টাকা বাড়বে বলেও উল্লেখ করেছে।
যদিও এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মুদ্রার অপর পিঠে থাকা তামাক কোম্পানির লাভ-লোকসান কী হবে সে সর্ম্পকে টুঁ শব্দ করা হয়নি। ফলে বাংলাদেশের সিগারেটের উৎপাদন প্রক্রিয়া, বাজার, বিপণন ব্যবস্থা, বহুস্তরভিত্তিক কর কাঠামো, এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধাতার বিষয়গুলো সর্ম্পকে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল হয়ে আসন্ন বাজেটে সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের কর কাঠামোর প্রস্তাব দেয়া সম্যক বলেই মনে করি।
চেয়েছিল বন্দুক, মিললো কামান
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অর্থনীতিবিদ, দেশি-বিদেশি তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক-কর্মীদের প্রস্তাব ও চিন্তার বাইরে লাগিয়ে সিগারেটের সবগুলো স্তরে কর ও মূল্য বাড়িয়ে চমক দেখিয়েছে এনবিআর। চলতি অর্থবছরর বাজেটের পর দ্বিতীয় বারের মতো নজিরবিহীনভাবে সিগারেটের চার স্তরেই কর হার সমান করা এবং সাথে মূল্য বৃদ্ধি করায় প্রশংসার দাবিদার বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)সহ এনবিআরের কর্মকর্তারা। যে দাবি তামাক নিয়ন্ত্রণের কর্মীরা করার সাহস দেখায়নি, তা একবারেরই করে দেখিয়েছেন তারা। এতদিন নিম্ন স্তরের সিগারেটের কর হার ছিল ৭৬ শতাংশ। আর ওপরের তিন স্তরের চেয়ে সিগারেটে মোট কর হার ছিল ৭৬ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ও পরবর্তীতে মধ্যমেয়াদে (৯ জানুয়ারি ২০২৫) সংশোধন করে তা সবগুলো স্তরের করভার সমান করার যুগান্তকারী কাজ করেছে এনবিআর। আগে কামান চাইলে, মিলতো বন্দুক। এবার তামাক কর বিশেষজ্ঞরা চেয়েছিল বন্দুক, কিন্তু এনবিআর দিয়েছে কামান। এনবিআরের সমালোচনা যেমন করতে হবে, তেমনি ভালো কাজের প্রশংসা করাও জরুরি। কিন্তু দুঃখজনক তামাক নিয়ন্ত্রণের বাইবেলখ্যাত এফসিটিসির আলোকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়ার পরও কয়েকটি সংগঠন ছাড়া কেউই এনবিআরকে ধন্যবাদ বা শুভেচ্ছা জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি।
নিম্ন ও মধ্যম স্তর একীভূত করার প্রস্তাবে লাভ তামাক কোম্পানির
হঠাৎ করেই এবার দাম বাড়িয়ে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তর একীভূত করার প্রস্তাব কোন বিবেচনায় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণের সংস্থাগুলো করেছে তা বোধগম্য হয়নি আমার। দীর্ঘ ১০ বছরের তামাক কর কাঠামো এবং তামাক কোম্পানির কূটকৌশল নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, কর না বাড়িয়ে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে তামাক নিয়ন্ত্রণের ওপরে। খানিকটা আশ্চর্য হয়েছি, সরকারের ২০ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায়ের একপেশে প্রস্তাব দেখে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও কর কাঠামো কতটা আমলে নিয়ে দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এবারে তামাক কর প্রস্তাব দিয়েছেন তাও স্পষ্ট নয়।
যেমন বলা হয়েছে, ১০ শলাকার নিম্ন স্তরের সিগারেটের দাম ৩০ টাকা বাড়িয়ে ৯০ টাকা এবং মধ্যম স্তরে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৯০ টাকা করে দুটিকে এক স্তরে আনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় বাড়বে বলে এনবিআরকে স্বপ্ন দেখানোর কথাও আছে প্রস্তাবে। কিন্তু মুদ্রার অপর পিঠে থাকা সিগারেট কোম্পানির কতটা লাভ হবে সেই প্রশ্নের বিবেচনা করা হয়েছে কী? কাগজে অংকের হিসাব আর গবেষণা পদ্ধতির সাথে মাঠের বাস্তবতার যোগসূত্র না থাকলে যে সমস্যা হয়, এবারে সিগারেটের স্তর কমানোর প্রস্তাবও আমার কাছে তেমনই মনে হয়েছে। কারণ নিম্ন স্তরে সিগারেটের কর হার একই রেখে সবোর্চ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ৩০ টাকা বাড়িয়ে ১০ শলাকার প্যাকেটের দাম ৯০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে প্রতি প্যাকেটে বর্ধিত ৩০ টাকার মধ্যে সরকার ৮৩ শতাংশ রাজস্ব হিসাবে পাবে ২৪ টাকা ৯০ পয়সা। হার বাকি ১৭ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ টাকার মধ্যে ৫ টাকা ১০ পয়সা পাবে সিগারেট কোম্পানি।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নিম্ন স্তরে সিগারেট বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৪৩৪ কোটি শলাকা বা ৬৪৩ কোটি প্যাকেট (১০ শলাকার)। তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী নিম্ন স্তরে প্রতি প্যাকেট ২৪.৯০ টাকা হিসাবে ৬৪৩ কোটি প্যাকেট রাজস্ব বাড়বে ১৬ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে প্যাকেট প্রতি ৫.১০ টাকা হিসাবে ৬৪৩ কোটি প্যাকেটে সিগারেট কোম্পানির আয় বাড়বে ৩ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। হ্যাঁ, কোনো ধরনের ব্যয় না বাড়িয়েই সিগারেট কোম্পানি আয় বা মানুফা বাড়বে ৩ হাজার ২৮১ কোটি টাকা!
এখানেই শেষ নয়, মধ্যম স্তরে যে ১০ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে সরকার রাজস্ব বাবদ পাবে ৮.৩০ টাকা এবং কোম্পানি পাবে ১.৭০ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সিগারেটের বিক্রির তথ্য অনুযায়ী, মধ্যম স্তরে ১২৫৭ কোটি শলাকা বা ১২৫ কোটি প্যাকেট সিগারেট বিক্রি হয়েছে। তাহলে প্যাকেট প্রতি ৮.৩০ টাকা হিসাবে সরকারের রাজস্ব বাড়বে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি। বিপরীতে প্যাকেট প্রতি ১.৭০ টাকা হিসাবে সিগারেট কোম্পানি ১২৫ কোটি প্যাকেটে পাবে ২১৩ কোটি টাকা। তাহলে ৯০ টাকা এমআরপি নির্ধারণ করে নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একটি স্তরে পরিনত করার প্রস্তাবে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে ১৭ হাজার কোটি টাকা (নিম্ন স্তরে ১,৬০০০ কোটি টাকা+মধ্যম স্তরে ১,০০০ কোটি টাকা)। অন্যদিকে কর না বাড়িয়ে দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে সিগারেট কোম্পানি আয় বাড়বে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা (নিম্ন স্তরে ৩,২৮১ কোটি টাকা+ মধ্যম স্তরে ২১৩ কোটি টাকা)।
হ্যাঁ গল্প নয়, তামাক নিয়ন্ত্রণের সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের স্তর কামনোর প্রস্তাবে সিগারেট কোম্পানির আয় বাড়বে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। প্রশ্ন হলো, সিগারেট কোম্পানির আয় বাড়লে ফলাফল কী হবে? সহজ উত্তর, সিগারেট কোম্পানি ব্যবসা সম্প্রসারণে এই অর্থ যেমন ব্যয় করবে। তেমনি বাড়তি যে মুনাফা হবে তার ৮০ শতাংশ লভ্যাংশ আকারে চলে যাবে বিদেশে ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো ও জাপান টোব্যাকো কোম্পানির মূল মালিকদের কাছে।
দ্বিতীয়ত, সিগারেটের কর হার বাড়ানোর কথা না বলে দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব এফসিটিসির নীতির পরিপন্থী। কারণ বিশ্ব জুড়ে স্বীকৃত হলো, কর বাড়িয়ে সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার কর বৃদ্ধি। তাহলে কেন বিশেষজ্ঞরা এবারে কর না বাড়িয়ে এত দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করলেন? কোন বিবেচনায়? সিগারেটের এই প্রস্তাবিত মূল্য বৃদ্ধিকে বাংলাদেশের কর-জিডিপির অনুপাতে জাতীয় অগ্রাধিকারের সাথে সমন্বয় সাধনের কথা বলা হয়েছে বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাবে। কিন্তু ২০ হাজার কোটি টাকা বাড়লে বাংলাদেশে কর- জিডিপির অনুপাত কি আহামরি বাড়বে? উত্তর হচ্ছে না। তামাক কোম্পানি আয়-মুনাফা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে দেশের কর-জিডিপির অনুপাত বাড়ানো কী তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য হতে পারে? এতদিন তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সেমিনার-আলোচনা সভায় অনেক অভিজ্ঞ কর্মী-সংগঠক-অর্থনীতিবিদদের বলতে শুনেছি, সিগারেটসহ তামাকখাত থেকে কতটা টাকা রাজস্ব আসলো সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। আমার দেখবো জনস্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় আমাদের কথা বলতে হবে!
তখনও তাদের বলেছি এখনো বলছি, বাংলাদেশের সিগারেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এনবিআরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে সেটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুইভাবেই এনবিআরের কর নীতির শক্তিশালী অবদান আছে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে। আইনের জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্যই বিশেষায়িত কর বসানোর এখতিয়ার দেয়া আছে এনবিআরকে। ফলে সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের কর কাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের বাস্তবতায়।
তৃতীয়ত, সবচেয়ে বড় কথা, হঠাৎ কেন নিম্ন ও মধ্যম স্তর একত্রিকরণ করার প্রশ্ন এলো, তাও স্পষ্ট নয়। যদিও ব্যাখা হিসাবে বলা হয়েছে, ‘স্তর প্রস্তাবিত একত্রিকরণ কর ব্যবস্থায় জটিলতা কমাবে এবং প্রশাসনের সুবিধা বাড়াবে। সিগারেটের চারটি মূল্যস্তর থাকায় কর হার ও মূল্য বৃদ্ধি সঠিকভাব কাজ করেন না। কমালে এনবিআরের জটিলতা কমবে এবং কর কাঠামোয় দক্ষতা বাড়বে। পাশাপাশি নিম্ন ও মধ্যম স্তরের দাম কাছাকাছি হওয়ায় ভোক্তা যেকোনো একটি স্তরের সিগারেট বেছে নেয়ার সুযোগ পায়। সিগারেটের বাজারের সিংহভাগ এ দুই স্তরে রয়েছে।’
স্তর কমালে সিগারেটের রাজস্ব আদায়ে খানিকটা সুবিধা হবে এটা অবশ্যই এবং এ দাবি বহুদিনের। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কখন ও কোন তরিকায় করা হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কাগজে পত্রে এনবিআর ৪ স্তরে দাম ঠিক করে দিলেও বাজারের ১৫/১৬ ধরনের দামের সিগারেট রয়েছে। এক স্তরের একাধিক সিগারেটের মূল্যস্তর রয়েছে। আর সিগারেট কোম্পানিগুলো এই কারসাজি করতে পারে ছোট্ট একটা শব্দ ‘তদুর্ধ্ব’ থাকার কারণে।
প্রতিবার বাজেটে মূল্য ও কর বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলা হয়, প্রতি ১০ শলাকা নিম্ন স্তরের সিগারেটের সবোর্চ্চ খুচরা মূল্য ৬০ টাকা ও তদুর্ধ্ব, মধ্যম স্তরে ৮০ টাকা ও তদুর্ধ্ব, উচ্চ স্তরে ১৪০ টাকা ও তদুর্ধ্ব এবং অতিউচ্চ স্তরে ১৮৫ টাকা ও তদুর্ধ্ব। এই তদুর্ধ্ব শব্দের কারণে নিম্ন স্তরে ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ৭৯ টাকা ৯৯ পয়সা পর্যন্ত নতুন ব্র্যান্ডের সিগারেট বাজারে আনতে পারে। একইভাবে মধ্যম স্তরে ৮০ থেকে শুরু করে ১৩৯ টাকা ৯৯ পয়সা পর্যন্ত যে কোনো দামের সিগারেট বাজারে আনতে পারে। এতে একই সিগারেট বেশি দামে বিক্রির সুযোগ পায় কোম্পানি। ফলে আসন্ন বাজেটে তদুর্ধ্ব শব্দটি প্রত্যাহার করা জরুরি। প্রকৃত অর্থে সিগারেটের বিদ্যামান বিপণন ব্যবস্থার আলোকে জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে চাইলে সবার আগে তদুর্ধ্ব শব্দ বাতিল করতে হবে। কারণ স্তর কমালেও একই স্তরে অনেকগুলো দামের সিগারেট আনার সুযোগ থেকে যাবে এবং আগের মতোই অপেক্ষাকৃত কম দামের সিগারেট কিনতে পারবে ভোক্তারা।
আর এতদিন স্তর থাকার কারণে সিগারেটের দাম ও কর বৃদ্ধি সিগারেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখেনি বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয়। বরং কিছু সত্যকে আড়াল করা হয়েছে। কারণ বিগত দিনগুলোতে সিগারেটের দাম বৃদ্ধিতেই বেশি মনযোগ ছিল এনবিআরের। আবার যতটুকু দাম বাড়ানো হয়েছে তার চেয়ে বেশি দামে সিগারেট আগে থেকেই বিক্রি হয়ে আসছে। প্রসঙ্গত, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে অতিউচ্চ স্তরে ১০ শলাকার সিগারেটের দাম ৫ টাকা বাড়িয়ে ১৯০ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। অর্থাৎ ২০ শলাকার সিগারেটের প্যাকেটের দাম ৩৭০ থেকে বাড়িয়ে ৩৮০ টাকা করার প্রস্তাব যখন করেছে তখন বাজেটে বেনসন ও মালবোরো সিগারেট বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। খুচরা শলাকা ২০ টাকা করে বিক্রির নির্দেশনা দিয়ে এখনই বিক্রি করছে সিগারেট কোম্পানিগুলো।
ফলে আন্তর্জাতিক গবেষকদের দেয়া ৩৮০ টাকার প্রস্তাবে প্রতি শলাকা বেনসের দাম হবে ১৯ টাকা কিন্তু বাজারে এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। এ কারণে আগামী বাজেটে ১০ টাকা প্রিমিয়াম স্তরের বাড়ানো হলেও কার্যত ভোক্তাদের উপর খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কারণ তারা আগে থেকেই এর চেয়ে বেশি দামে সিগারেট কিনতে বাধ্য হচ্ছে। একইভাবে আমরা দেখেছি, ২০২০-২১ অর্থবছরে দাম নিম্ন স্তরে ১০ শলাকার সিগারেটের প্যাকেটে দাম ২ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৩৯ টাকা। অর্থাৎ প্রতি শলাকার দাম হয় ৩ টাকা ৯০ পয়সা। যেহেতু পয়সার প্রচলন নেই দেশে, তাই ২০১৯-২০ অর্থবছরে যখন ৩৭ টাকা ছিল তখনও প্রতি শলাকা সিগারেট ৪ টাকায় বিক্রি করতো এবং ২ টাকা বাড়ানোর পরও দাম কিন্তু আগে থেকে বিক্রির সীমার মধ্যে থাকলো। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৯ টাকা বহাল রাখার পর ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০ শলাকার প্যাকেটের দাম ১ টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়। কাগজে পত্রে ৮ শতাংশে বেশি দাম বাড়ানো হলেও কার্যত তিন অর্থবছর পরেও কার্যত ভোক্তাদের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি নিম্ন স্তরের সিগারেটে।
কর হার ৭৩ শতাংশই বহাল রাখায় সরকারের খানিকটা রাজস্ব বাড়লেও সিগারেট কোম্পানিরও মুনাফা বেড়েছে। লাভ হয়েছে সিগারেট কোম্পানির। ২০১৮ সালে আমার গবেষণায় দেখিয়েছি, ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিএটিবি’র সিগারেট উৎপাদন দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৫ শ কোটি শলাকা। বিপরীতে ২০১১ সালে নিট মুনাফা ছিল ২৫৫ কোটি টাকা, যা ২০২০ সালে বেড়ে হয় ১০৮৯ কোটি টাকা। ১০ বছরে নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৪ গুণ। দ্বিগুণ উৎপাদন বাড়িয়ে সাড়ে ৪গুণ নিট মুনাফা বৃদ্ধির এই সুযোগ বিএটিবি পেয়েছে কর না বাড়িয়ে সিগারেটের দাম বাড়ানোর কারণে। ফলে হুট করে স্তর একত্রিকরণের আগে বিদ্যমান কর কাঠামোর দুর্বলতাগুলো সামনে আনা জরুরি বলে মনে করি।
আর সবচেয়ে বড় কথা, এনবিআরকে প্রতিপক্ষ করার মানসিকতাও পরিহার করতে হবে। কারণ এনবিআরের বাজার নজরদারির এখতিয়ার নেই আইনে। ফলে বেধে দেয়া এমআরপির চেয়ে বেশি দাম সিগারেট বিক্রি বন্ধে এনবিআর ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। যেমন গত ৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে সবধরনের সিগারেটের দাম ও কর বাড়িয়েছে এনবিআর। কিন্তু এপ্রিল মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত বিএটিসহ সিগারেট কোম্পানিগুলো পুরানো দামের প্যাকেট নতুন দামে বিক্রি করেছে। গেল কয়েক বছরে ধরে বাজেটের পর ৪/৫ মাস পর্যন্ত প্যাকেটে গায়ে নতুন দাম উল্লেখ না করেই নতুন দামে সিগারেট বিক্রি করে শত শত কোটি টাকা লুটে নিয়েছে।
আমাদের সংবাদের পর গত বছরে এনবিআর প্রথমবারের মতো বিএটি-জেটিআই এর ওয়্যারহাউজ বা গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪’শ কোটি টাকার কর দাবি উত্থাপন করে। এবারও প্রাক-বাজেট সভায় এনবিআরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা পুরানো দামের প্যাকেটের সিগারেট নতুন দামে বিক্রি করায় বাড়তি কর দাবিনামা পাঠাবে কোম্পানিগুলোকে। তাই এনবিআর এর উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সহায়তামূলক মানসিকতা বাড়ানোর বিকল্প নেই তামাক নিয়ন্ত্রণ তথা জনস্বাস্থ্য রক্ষায় আন্দোলনকারীদের।
এ কারণেই ভোক্তাদের ওপর সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কার্যকর করতে অবশ্যই অন্যান্য পণ্যের মতো সবোর্চ্চ খুচরা মূল্যে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক দিক হলো বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত কয়েকটি সংগঠন এমআরপি বা সবোর্চ্চ খুচরা মূল্যের বিষয়টি মুখে আনে না। বাজেট প্রস্তাবসহ কোনো আলোচনা ও লেখায় এমআরপি শব্দ উল্লেখ করে না। অদ্ভূত কান্ড তাদের! কারণ আইন-বিধিতে এনবিআর বলছে সবোর্চ্চ খুচরা মূল্য অথচ তামাক নিয়ন্ত্রণের কয়েকটি সংগঠন বলছে খুচরা মূল্য! মজার বিষয়, সিগারেট কোম্পানি এত বছর ধরে আইন লংঘন করে সবোর্চ্চ খুচরা মূল্যকে খুচরা মুল্য লিখে হাজার হাজার কোটি টাকা ফাঁকি দিয়ে আসছে, বৈধভাবে লুটপাট করছে এবং বিষয়টি তুলে ধরে একাত্তর টেলিভিশনে আমার এবং দৈনিক শেয়ারবিজ পত্রিকায় বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পুনঃনির্দেশনা দিয়ে দেশে সকল সিগারেটের প্যাকেটে এমআরপি লেখা বাধ্যতামূলক করেছে ২০২৩ সালে এবং সিগারেট কোম্পানিগুলো রিটেল প্রাইসের বদলে এমআরপি লিখছে। সিগারেট কোম্পানিগুলো এত বছরের অভ্যাস ভুলে আইন মেনে এমআরপি লিখলেও তামাক নিয়ন্ত্রণের কর্মী-সংস্থাগুলো তারপরও এমআরপি শব্দটাই অস্বীকার করে কোন বিবেচনায়? এতদিন সিগারেট কোম্পানি বলেছে খুচরা মূল্য, তামাক নিয়ন্ত্রণের কেউ কেউ কী তামাক কোম্পানির ধারাবাহিকতা রক্ষায় সবোর্চ্চ খুচরা মূল্য না বলে খুচরা মূল্য বলছে? দেশের আইনের পরিপন্থি বক্তব্য ও প্রস্তাব দিয়ে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণের কাজ এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। আইন প্রতিষ্ঠা করতে হলে আইনের চর্চার ও প্রয়োগের মাধ্যমেই করার বিকল্প নেই।
এমআরপির চেয়ে বেশি দামে বিক্রি অবৈধ
যদিও বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণের অনেকেই মনে করেন যে, ‘সিগারেটের দাম যত বেশি হয় হোক কিংবা তামাক কোম্পানিগুলো এমআরপির চেয়ে বেশি নিলে সমস্যা নেই। আমরা তো চাই, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বেশি দামে বিক্রি হোক।’
এটা মারাত্নক ভুল চিন্তা এবং যা তামাক কোম্পানির হাতকে শক্তিশালী করবে। কারণ জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রিত পণ্য এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদন নিতে সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের দাম ও শুল্ক-কর নির্ধারিত হয়। ফলে বেঁধে দেয়া এমআরপির চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রি কোনোভাবেই বৈধ নয়।
যদিও বছরের পর বছর বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিগুলো অবৈধভাবে ক্রেতাদের কাছে এমআরপি মূল্যে ক্রেতাদের কাছে বিক্রির বদলে খুচরা দোকানিদের কাছেই প্যাকেটে মুদ্রিত এমআরপি দামে বিক্রি করে আসছে। এবং দোকানদারকে বিজ্ঞাপন দিয়ে এবং মৌখিকভাবে বেশি দামে সিগারেট বিক্রির নির্দেশনা দিয়ে আসছে বিএটিবি, জেটিআইসহ সিগারেট কোম্পানিগুলো। এটা পুরোপুরি অবৈধ এবং এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ২০ কোটি টাকা জনগণের কাছ থেকে বাড়তি নিচ্ছে সিগারেট কোম্পানিগুলো। মাসে ৬০০ কোটি টাকা এবং বছরে ৭ হাজার কোটি টাকা বেশি ভোক্তাদের কাছ থেকে আদায় করলেও কানাকড়ি রাজস্ব পাচ্ছে না এনবিআর।
যদিও ক্রেতাদের কাছ থেকে বাড়তি নেয়া ৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়ার কথা সরকারের। এ নিয়ে আমার সংবাদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর গবেষণার মধ্যমে জনগণের পকেট কাটার বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম ২০২২ সালে। যা পরবর্তীতে বিষয়টি আমার প্রশ্নের উত্তরে এনবিআরের তৎকালীন চেয়ারম্যান পরিস্কারভাবে জানিয়েছিলেন, বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে এক টাকা বাড়তি নেয়ার সুযোগ নেই।
ফলে সিগারেট কোম্পানিগুলো বহু বছর ধরে যে অবৈধভাবে সিগারেটের এমআরপির চেয়ে বেশি দামে প্যাকেট ও খুচরা শলাকা বিক্রি করছে সেটা পুরোপুরি অবৈধ। তাদের বৈধভাবে অবৈধ ব্যবসা কি সমর্থনযোগ্য? আইন সিদ্ধ? মোটেও তা নয়, এটা ব্যবসার নামে নৈরাজ্য করে জনগণের পকেট কাটছে সিগারেট কোম্পানিগুলো। তাই এমআরপির চেয়ে বেশি দামে বা যত বেশি দামে সিগারেট বিক্রি ততই ভালো এই চিন্তা বা কথা যারা বলছেন-তারা কী বুঝে বলছেন? না বুঝেই সিগারেট কোম্পানির লাভের পাল্লা ভারি করার এসব কথা বলার বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সেমিনার-আলোচনা সভায় বলে আসছি। সবচেয়ে বড় কথা সিগারেট কোম্পানি কর ফাঁকি দিয়ে বাড়তি যে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করবে তা তারা তদবির বাণিজ্যে কাজে লাগবে। সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে সুবিধা আদায়ের কাজে ব্যবহার করবে কোম্পানিগুলো।
মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি কর বৃদ্ধি
চলতি অর্থবছরে সিগারেটের প্রিমিয়াম স্তরে ২০ শলাকার প্রতি প্যাকেটের সবোর্চ্চ খুচরা মূল্য ৩২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করে ৩৭০ টাকা। টাকার অংকে বৃদ্ধি প্যাকেট প্রতি ৫০ টাকা আর শতাংশের বিবেচনায় প্রায় ১৬ শতাংশ। সাথে এক দশমিক পাঁচ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে মোট করভার ৮৩ শতাংশ। একইভাবে উচ্চ স্তরে সিগারেটে দাম ৪০ টাকা বাড়িয়ে সবোর্চ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেয় ২৮০ টাকা। মূল্যবৃদ্ধি প্রায় ১৭ শতাংশ। মধ্যম স্তরে ২০ টাকা বাড়িয়ে সবোর্চ্চ খুচরা মূল্য ১৬০ টাকা করা হয়েছে ২০ শলাকার প্যাকেটে। এখানেও মূল্যবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। ওপরের এই তিন স্তরেই দেড় শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। সাথে আছে ১৫ শতাংশ মূসক এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ। আর নিম্ন স্তরে ২০ টাকা বাড়িয়ে সবোর্চ্চ খুচরা মূল্য ১২০ টাকা করা হয়। এখানেই সবোর্চ্চ ২০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির পাশাপশি করহার ৭ শতাংশ বাড়িয়েছে এনবিআর।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ থেকে ১৩ শতাংশের মধ্যে উঠানামা করছে। বিপরীতে এবার সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে প্রিমিয়াম স্তরে ১৫.৬৩ শতাংশ, উচ্চ স্তরে ১৬.৬৭ শতাংশ, মধ্যম স্তরে ১৪.২৩ শতাংশ এবং নিম্ন স্তরে ২০ শতাংশ। শুধু মূল্যস্ফীতির চেয়ে দাম বেশি বাড়ানো হয়েছে তাই-ই নয়, কর হার বাড়ানো হয়েছে দেড় শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় সিগারেট দাম বাড়ানোর কথা বলার প্রাসঙ্গিকতা খানিকটা দূর হয়েছে। বিশ্বব্যাপী কর হার বৃদ্ধিকে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই আলোকে দেখলে এবারে এনবিআর এফসিটিসির মূল্য লক্ষ্যকে কেন্দ্র করেই সিগারেটের কর কাঠামোয় গুণগত পরিবর্তন এনেছে। বিশেষ করে সবচেয়ে কম দাম এবং সবচেয়ে বেশি বিক্রিত নিম্ন স্তরের সিগারেটের কর বেড়েছে এক লাফে ৭ শতাংশ। এর মাধ্যমে সব স্তরে সিগারেটের করহার সমান করার দীর্ঘ দিনের দাবি পুরণ করেছে এনবিআর। যদিও এখনও সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত জর্দা-গুল এবং বিড়ির ক্ষেত্রে এতটা শক্ত অবস্থানে নেই সরকার।
আসন্ন বাজেটে যেসব প্রস্তাব দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য করা জরুরি
১. সিগারেটসহ সবধরনের তামাকজাত দ্রব্যে সারচার্জ ১ শতাংশ বাড়িয়ে ২ শতাংশ করা ।
২. নিম্ন স্তরে ৩০ টাকা, মধ্যম ও অতিউচ্চ স্তরে ১০ টাকা করে স্পেসিফিক ডিউটি বা সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করার প্রস্তাব করা। প্যাকেট প্রতি সুনির্দিষ্ট কর আরোপ হলে সিগারেটের দাম বাড়বে এবং জনগণের দেয়া পুরো টাকায় রাজস্ব আকারে পাবে এনবিআর।
৩. প্রস্তাবনা থেকে ‘তদুর্ধ্ব’ শব্দ বাতিল করা।
৪. তামাকজাত দ্রব্য রফতানিতে থাকা ২৫ শতাংশ শুল্ক পুনর্বহাল করা। কারণ দেশে তামাকের চাষ হু হু করে বাড়ছে। এতে খাদ্য নিরাপত্তাহীন যেমন বাড়ছে তেমনি বাংলাদেশের সস্তা তামাক পাতা বিদেশে রফতানি করে বিশাল মুনাফা করছে সিগারেট কোম্পানিগুলো।
৫. ফিল্টারযুক্ত বিড়ির অস্তিত্ব নেই, তাই ফিল্টার ও নন ফিল্টার তুলে দিয়ে বিড়ির একটাই প্রস্তাব করা।
৬. জর্দার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২০ গ্রামের নিচে বিক্রি করা যাবে না। গুলের ক্ষেত্রে ১০ গ্রাম করে সর্বনিম্ন করে কর হার বাড়ানোর পাশাপাশি সকল ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত পণ্য উৎপাদকদের লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা দিতে হবে।
লেখক : তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক ও বিশেষ প্রতিনিধি, একাত্তর টেলিভিশন
sinhasmp@yahoo.com