ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১ মে ২০২৫

বিএটিবির বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের প্রতিবেদনে মে দিবসের সেরা পুরস্কার পেলেন সুশান্ত সিনহা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ১, ২০২৫ ১১:৩৫ অপরাহ্ণ । ২১২ জন

কুষ্টিয়ায় ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি বাংলাদেশ (বিএটিবি) এর ১১টি অনুমোদনহীন কারখানায় শ্রম আইনের ৪৫টি ধারা-উপধারার লংঘন নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন করায় মে দিবসের টেলিভিশন ক্যাটারগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা।

আজ বৃহস্পতিবার (১ মে ২০২৫) দুপুরে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে পুরস্কার ও সনদপত্র তুলে দেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শ্রম মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে মহান মে দিবস ও এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবসের আলোচনা সভায় এই পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

গত নভেম্বরে ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সুশান্ত সিনহার ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলোতে তুলে ধরা হয় কিভাবে বছরের পর বছর বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কুষ্টিয়ায় কারখানা চালাচ্ছে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই। প্রতিবেদনে তুলে ধরেন কুষ্টিয়া অঞ্চলে বিএটির ১২টির মধ্যে ১১টি কারখানারই চলছে সরকারের কোনো অনুমোদন ও নিবন্ধন ছাড়া। আর মৌসুমী কারখানা হিসাবে ১২৫ দিন চালানোর অনুমতি নিয়ে জেএলটি কারখানা গোপনে প্রায় সারাবছর চালায় ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো। এমনকী বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিটির বিরুদ্ধে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করানোসহ শ্রম আইনের ৪৫টি ধারা-উপধারা লংঘনের প্রমাণ মিলেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে।

প্রথমবারের মতো মে দিবস ও জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবসে একত্রে পালন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়। সারাদেশে শ্রমিকদের কর্মপরিবেশসহ শ্রম অধিকার বিষয়ে পুরস্কার ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।

স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ১৯ শিক্ষার্থীর পাশাপাশি ৯ জন টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং চিত্র সাংবাদিককে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

টেলিভিশন ক্যাটাগরিরতে প্রথম হয়েছেন একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা, দ্বিতীয় স্থানে এশিয়ান টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি রাকিব মানিক এবং তৃতীয় স্থান বিজয়ী জাগো নিউজ২৪ এর ইয়াসির আরাফাত। সংবাদ পত্র ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছেন।

এদিকে সুশান্ত সিনহার প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এবং ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পেয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন লঙ্ঘন করায় বিএটিবির এমডিসহ ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। গত মঙ্গলবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) মো. ফারজুন ইসলাম বাদী হয়ে খুলনা বিভাগের শ্রম আদালতে এ মামলা করেন।

বিএটিবি’র যে চারজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা হলেন, কোম্পানির এমডি মনিশা আব্রাহাম, হেড অপ অপারেশনস জর্জ লুইস মার্সেডো, কোম্পানির সেক্রেটারি ও সিনিয়র লিগ্যাল কাউন্সেল সৈয়দ আফজাল হোসেন এবং প্লান্ট ম্যানেজার (জি.এল.টি.পি) মুকিত আহমেদ চৌধুরী।