কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলের পানিতে নীলফামারীতে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করলেও নদী পাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক। এতে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। দিনভর আতঙ্কে থাকা নদীপাড়ের মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছেন না। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, বিদ্যালয় কিংবা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদিপশু ও গৃহস্থালি সামগ্রী নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত রাতে সবশেষ তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর রেকর্ড করা হয়। তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিসা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে তবে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে মানুষজন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রাতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এখন বিপৎসীমার নিচে পানির স্তর। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সাত ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। শত শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, ফসলের মাঠে মাছ সাঁতার কাটছে। অনেকে শুকনো খাবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু বাঁধে বা বিদ্যালয়ের বারান্দায়।
পূর্ব ছাতনাই গ্রামের আলিফউদ্দিন বললেন, প্রতিবার তিস্তার পানি বাড়লেই বুক কেঁপে ওঠে। এবারও সব তলিয়ে গেছে সব কিছু। পানি নামতে শুরু হলে আবার ভাঙনের শুরু হবে। সেটা আরেক ভয়।
একই গ্রামের বাসিন্দা আছিয়া বেগম বলেন, নদীর জন্য সারারাত ভয়ে কাটিয়ে দিয়েছি। এখন কিছুটা পানি কমলেও ভয় তো কাঠছেই না। আবার কখন জানি আঘাত হানে। ছেলেমেয়েগুলোর খাবারটুকুও শুকনো নেই। রাতেই হাঁটু পানি ডিঙিয়ে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে স্কুলে গেছি।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, নিম্নাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শুকনো খাবার ও প্রাথমিক ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হয়েছে রাত থেকেই।


