ঢাকামঙ্গলবার , ১০ জুন ২০২৫

দীর্ঘ ছুটিতেও বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ১০, ২০২৫ ১২:০৬ অপরাহ্ণ । ২৭ জন

ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটির সুযোগে রাজধানী ঢাকা প্রায় ফাঁকা। অধিকাংশ মানুষ ছুটে গেছেন গ্রামের বাড়িতে, রাস্তায় যানবাহনের চাপও অনেকটাই কম। তারপরও পাল্টাচ্ছে না ঢাকার বায়ুদূষণের চিত্র। আজ মঙ্গলবার (১০ জুন) ঢাকার বায়ুমান সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ১৪৩– যা ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠী’র জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে চিহ্নিত।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান নির্ধারণকারী সংস্থা আইকিউএয়ার জানিয়েছে, এ সূচকে ঢাকা রয়েছে বিশ্বের পঞ্চম দূষিত শহর হিসেবে। তালিকায় প্রথম অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (একিউআই ১৭৬), দ্বিতীয় নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম (১৫৮), তৃতীয় ভারতের কলকাতা (১৫৩) এবং চতুর্থ অবস্থানে চিলির সান্টিয়াগো (১৫১)।

ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা ঈদের দিন (৭ জুন) থেকেই বাড়তে থাকে। সেদিন বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একিউআই ছিল ১০৯, যা সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। অথচ তার আগের দিন (৬ জুন) একিউআই ছিল ৭৯ – যা সহনীয় পর্যায়ে ছিল। ঈদের দিন ঢাকার অবস্থান ছিল ১১তম এবং পরদিনই উঠে আসে তৃতীয় স্থানে।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী:

০-৫০: ভালো

৫১-১০০: সহনীয়

১০১-১৫০: সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর

১৫১-২০০: সাধারণ মানুষের জন্যও অস্বাস্থ্যকর

২০১-৩০০: খুবই অস্বাস্থ্যকর

৩০১+: দুর্যোগপূর্ণ

ঢাকা শহরে যানবাহন, নির্মাণকাজ এবং শিল্পকারখানা থেকে নির্গত ধুলাবালি ও দূষিত গ্যাসই মূলত বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত। ঈদের মতো ছুটিতেও দূষণ এভাবে অব্যাহত থাকায় প্রশ্ন উঠছে— ঢাকার বায়ু ঠিক কী কারণে এতটা দূষিতই থেকে যাচ্ছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিকভাবে বাতাসের অবাধ চলাচল ব্যাহত হওয়া, নির্মাণসাইটে নিয়ম না মানা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি মিলছে না।

বায়ুদূষণের এই উচ্চমাত্রা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদের জন্য এটি আরও বিপজ্জনক। জনসচেতনতা ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান কঠিন বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।