গতকাল (১৩ জুন) বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা রুপসী বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। প্রতিটি বগিতে গাদাগাদি করে মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল, বসার তো সুযোগই ছিল না অনেকের জন্য। এতে ভয়াবহ দুর্ভোগের শিকার হন বিশেষ করে বাচ্চা শিশু ও বৃদ্ধদের সঙ্গে যেসব পরিবার ভ্রমণ করছিল।
যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনে সিট থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে অনেকে নিজেদের নির্ধারিত সিটেও বসতে পারেননি। কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের চাপেই সিট দখল হয়ে যায়। ট্রেনের দরজার কাছ থেকে শুরু করে টয়লেট পর্যন্ত ঠাসাঠাসি অবস্থা তৈরি হয়।
বগিগুলোর ভিতরে প্রচণ্ড গরমে ঘামতে ঘামতে অনেক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে। শিশুদের কান্না, পানির জন্য হাহাকার—এসব ছিল পুরো যাত্রাপথে সাধারণ চিত্র।
ঢাকামুখী এই যাত্রায় যাত্রীদের অনেকেই বলেন, “আমরা নির্ধারিত টিকিট কেটেও বসতে পারিনি। বাচ্চাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকি চোখে পড়েনি।”
অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত টিটি (ট্রেন টিকিট চেকার) অবৈধভাবে এসব যাত্রীদের কাছ থেকে ১০০–২০০ টাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এতে করে সিটধারী যাত্রীদের পাশেই ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে ছিল অবৈধ যাত্রীরা—ফলে বয়স্ক, নারী ও শিশুদের চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়।
একজন যাত্রী বলেন, “বৃদ্ধা মা দাঁড়িয়ে ছিলেন পুরোটা সময়। ছোট বাচ্চা নিয়ে নারী যাত্রীরা হাঁটতেও পারেননি। আমরা যারা সিটে বসে ছিলাম, তাদের কাঁধে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিল গরমে ভেজা লোকজন। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।”
এ পরিস্থিতির জন্য রেল কর্তৃপক্ষ ও টিটিদের দায়ী করছেন যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, কিছু অসাধু কর্মকর্তা যাত্রীদের দুর্বলতা ও চাহিদার সুযোগ নিয়ে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করছেন, যার ফলে প্রকৃত টিকিটধারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাত্রীরা বলছেন—এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না। নিরাপদ, সম্মানজনক ও নিয়মতান্ত্রিক যাত্রা নিশ্চিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।