জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেশে নিকোটিন পাউচ ও ই-সিগারেটের উৎপাদন ও প্রসার বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস সোসাইটি (BMSS)। সোমবার এক প্রেস বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটি (বেজা) বহুজাতিক কোম্পানি ফিলিপ মরিসকে ক্ষতিকর ‘নিকোটিন পাউচ’ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়ায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
BMSS বলছে, নিকোটিন পাউচ, ই-সিগারেট ও ভেপ প্রচলিত তামাকের মতোই উচ্চমাত্রায় আসক্তিকর এবং অনেক ক্ষেত্রে আরও বেশি ক্ষতিকর। এসব পণ্য মুখ ও মাড়ির ক্ষতি করা ছাড়াও হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ বৃদ্ধি করে—যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কিন্তু মুনাফার স্বার্থে কোম্পানিগুলো এগুলোকে “ধূমপান ছাড়ার উপায়” বা “কম ক্ষতিকর বিকল্প” হিসেবে প্রচার করছে।
প্রেস বিবৃতিতে BMSS উল্লেখ করে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে নিকোটিন পাউচ ও ই-সিগারেটকে স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ ও আসক্তিকর পণ্য হিসেবে সতর্ক করেছে। বিশ্বে নেদারল্যান্ড, জার্মানি, বেলজিয়াম, রাশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ অন্তত ১১টি দেশ নিকোটিন পাউচ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে, আরও ৩৪টি দেশ কঠোর নিয়ন্ত্রণে এগুলো নির্মূলের উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, ব্রাজিল, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারতসহ ৪৭টি দেশ ই-সিগারেট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।
BMSS বলছে, বাংলাদেশে এখনো এসব আসক্তিকর নিকোটিন পণ্য ব্যাপকভাবে প্রচলিত নয়। এই সময়ে নিকোটিন পাউচ কারখানা স্থাপনের অনুমতি নতুন নেশাজাতীয় দ্রব্যের বাজার তৈরি করবে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে স্বাস্থ্যব্যয়ের চাপ। স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যমতে, দেশে চিকিৎসা ব্যয়ের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষের ব্যক্তিগত পকেট থেকে যায়, যা রাষ্ট্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
এই পরিস্থিতিতে BMSS দ্রুত নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমতি বাতিল, সব ধরনের ই-সিগারেট/ভেপজাতীয় পণ্য ও নিকোটিন পাউচের উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিপণন, আমদানি ও রপ্তানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরও শক্তিশালী করার আহবান জানিয়েছে সংগঠনটি।


