ঢাকাশুক্রবার , ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

শীতের মৌসুমেও রাজধানীর কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্যের দামে স্বস্তি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫ ১২:৪৭ অপরাহ্ণ । ১৯ জন

শীতের ভরা মৌসুমেও রাজধানীর কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে স্বস্তি ফেরেনি। সবজি, মাছ, মাংস থেকে শুরু করে চাল-ডাল ও ভোজ্যতেল—প্রায় সব পণ্যের দামই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে। বাজারে পণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও উচ্চমূল্যের কারণে ক্রেতারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজির কোনো ঘাটতি নেই। ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, শিম, টমেটো, গাজর, মুলাসহ সবজিতে বাজার ভরপুর থাকলেও দাম কমেনি। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সংসার পরিচালনা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।

বাজারভেদে টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। গাজর, শিম ও বরবটির কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে নামছে না। শালগমের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা ৩০ থেকে ৫০ টাকা এবং ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৩০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শাকসবজির ক্ষেত্রেও দাম চড়া। পালংশাকের এক আঁটি কিনতে গুনতে হচ্ছে ২০ টাকা, লালশাক ও মুলাশাক বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা আঁটি দরে। বেগুনের কেজি ৫০ থেকে ৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং এক হালি কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

মাছের বাজারেও কমেনি দামের চাপ। মাঝারি আকারের রুই মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিং মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা এবং শোল মাছের দাম উঠেছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। চিংড়ি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকায়।

মাংসের বাজারেও স্বস্তি নেই। গরুর মাংস কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায় এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। তবে তুলনামূলকভাবে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় নেমেছে।

যাত্রাবাড়ী আড়তে বাজার করতে আসা গৃহিণী সেলিনা বেগম বলেন, “এখন বাজারে গেলে সবচেয়ে কঠিন হয় হিসাব মেলানো। শীতের সবজি থাকলেও দাম এত বেশি কেন—সেটাই বুঝি না।”

আরেক ক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, “বেতন বাড়েনি, কিন্তু বাজার খরচ নিয়মিত বাড়ছে। এতে সংসার চালানো দিন দিন দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে।”

অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আড়ত থেকেই বাড়তি দামে পণ্য কিনতে হওয়ায় তাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবহন ও শ্রমিক খরচ বৃদ্ধিও দামের ওপর প্রভাব ফেলছে বলে জানান তারা।

সবমিলিয়ে শীত এলেও রাজধানীর কাঁচাবাজারে দামের ক্ষেত্রে কোনো শীতলতা নেই। ক্রেতাদের প্রত্যাশা-বাজারে কার্যকর তদারকি ও বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের দামে স্থিতিশীলতা ফিরুক, যাতে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তি পায়।