বিশ্বের শীর্ষ রূপা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে মেক্সিকো শীর্ষে রয়েছে, যার পরে চীন, পেরু, এবং ভারত উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চিলি, রাশিয়া, বলিভিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। রূপা কেবল গয়না ও মুদ্রা তৈরিতে নয়, ইলেকট্রনিক্স, সৌর প্যানেল, ব্যাটারি এবং চিকিৎসা যন্ত্রপাতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সবুজ প্রযুক্তি ও শিল্প ব্যবহারের প্রসার অব্যাহত থাকায়, রূপা উৎপাদন সম্পদ সমৃদ্ধ দেশগুলির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচক হয়ে উঠেছে।
২০২৫ সালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রূপা উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশ হলো:
১. মেক্সিকো – ৬,৩০০ মেট্রিক টন

মেক্সিকো বিশ্বের বৃহত্তম রূপা উৎপাদনকারী হিসেবে তার অবস্থান ধরে রেখেছে। বিশাল মজুদ এবং খনি-বান্ধব নিয়ন্ত্রক পরিবেশের কারণে, দেশের রূপা উৎপাদন বিশ্বব্যাপী সরবরাহে প্রাধান্য বিস্তার করে চলেছে। মেক্সিকোর বেশিরভাগ রূপা সোনা, সীসা এবং দস্তা খনির উপজাত হিসেবে উত্তোলন করা হয়।
২. চীন – ৩,৩০০ মেট্রিক টন

চীন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, তার বিশাল শিল্প ভিত্তি এবং সমন্বিত খনিজ কার্যক্রমের কারণে। তামা ও সীসার পাশাপাশি প্রায়শই রূপা উৎপাদিত হয়। দেশের ইলেকট্রনিক্স ও সৌর প্যানেলের চাহিদা দেশীয় ব্যবহার এবং রপ্তানি উভয়কেই জ্বালানি দেয়।
৩. পেরু – ৩,১০০ মেট্রিক টন

পেরুর সমৃদ্ধ খনিজ সম্পদ এটিকে ধারাবাহিক শীর্ষ প্রতিযোগী হিসেবে রেখেছে। দেশের রূপা খনি, বিশেষ করে আন্দিজ অঞ্চলে, বিশ্বের সবচেয়ে উৎপাদনশীল খনি গুলির মধ্যে অন্যতম। রূপা প্রায়শই দস্তা এবং সীসার পাশাপাশি খনন করা হয়।
৪. পোল্যান্ড – ১,৩০০ মেট্রিক টন

পোল্যান্ডের রূপা উৎপাদন মূলত কেজিএইচএম পোলস্কা মিডজ খনি কোম্পানির মাধ্যমে হয়, যা বিশ্বের বৃহত্তম তামা ও রূপা খনিগুলির মধ্যে একটি পরিচালনা করে। দেশের স্থিতিশীল উৎপাদন দক্ষ খনির অবকাঠামো প্রতিফলিত করে।
৫. বলিভিয়া – ১,৩০০ মেট্রিক টন

উৎপাদনে বলিভিয়া পোল্যান্ডের সমান অবস্থানে রয়েছে। মূলত পোটোসি অঞ্চলে রূপা খনন করা হয়। দেশটির খনির ইতিহাস ঔপনিবেশিক আমল থেকে শুরু হয়েছে এবং রূপা অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
৬. রাশিয়া – ১,২০০ মেট্রিক টন

রাশিয়ার রূপা উৎপাদন সাইবেরিয়া এবং সুদূরপ্রাচ্য জুড়ে বিস্তৃত। ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও দেশটি বিশ্ব রূপা বাজারে শক্তিশালী উপস্থিতি বজায় রেখেছে।
৭. চিলি – ১,২০০ মেট্রিক টন

তামার জন্য সুপরিচিত চিলি, উপজাত হিসেবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রূপা উৎপাদন করে। এর খনির খাত উন্নত প্রযুক্তি এবং বিদেশী বিনিয়োগ থেকে উপকৃত হয়।
৮. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – ১,১০০ মেট্রিক টন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রূপা উৎপাদন মূলত নেভাদা, আলাস্কা এবং আইডাহো থেকে আসে। বৃহত্তম উৎপাদক না হলেও, দেশের খনির কার্যক্রম অত্যন্ত যান্ত্রিক এবং দক্ষ।
৯. অস্ট্রেলিয়া – ১,০০০ মেট্রিক টন

অস্ট্রেলিয়ার রূপা উৎপাদন মূলত সীসা ও দস্তা খনির সাথে সংযুক্ত, বিশেষ করে নিউ সাউথ ওয়েলস ও কুইন্সল্যান্ডে। দেশের শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক কাঠামো টেকসই খনির অনুশীলনকে সমর্থন করে।
১০. কাজাখস্তান – ১,০০০ মেট্রিক টন

কাজাখস্তান শীর্ষ ১০ এর মধ্যে রয়েছে, যেখানে মূলত মধ্য ও পূর্ব অঞ্চলে রূপা খনন করা হয়। আধুনিক খনির কৌশলের কারণে দেশটি ক্রমাগত তার উৎপাদন বৃদ্ধি করছে।
রূপা কেবল মূল্যবান ধাতু হিসেবেই নয়, বরং আধুনিক প্রযুক্তি ও সবুজ উদ্যোগের জন্যও অপরিহার্য। বিশ্বের শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশগুলো তাদের সমৃদ্ধ খনিজ সম্পদ, আধুনিক খনির কৌশল এবং দক্ষ খনি অবকাঠামোর মাধ্যমে বৈশ্বিক রূপা বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।


