ঢাকাবুধবার , ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে পরিবেশ সংস্কার শুরু, ধারাবাহিকতা জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ১০, ২০২৫ ৪:৩৩ অপরাহ্ণ । ২৫ জন

বাংলাদেশের প্রশাসনিক ও আইনগত কাঠামোতে পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শুরু হয়েছে। তবে বাস্তব পরিবর্তন আনতে সময়, ধারাবাহিক প্রচেষ্টা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সাভারের ব্র্যাক সিডিএমে অনুষ্ঠিত ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ ইন্টারন্যাশনালের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা প্রশাসন ও আইনি কাঠামো দু’টোকেই সংস্কারের আওতায় আনছি। তবে যে দেশ পরিবেশ সূচকে ১৮০ দেশের মধ্যে ১৭৯তম স্থানে থাকে, সেটি এক বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে পারে না।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আগামী ৫–৭ বছরে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৩-এর কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বর্তমান সরকার একটি প্রায় ভেঙে পড়া ব্যবস্থা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছে। “প্রথম কাজ ছিল এটিকে ন্যূনতম কার্যকর করা এবং তারপর পরিবর্তনের সূচনা। আমরা যাত্রা শুরু করেছি; লক্ষ্য অনেক দূরে। তবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং এগুলো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে অব্যাহত থাকতে হবে।”

জবাবদিহি প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক সহিংসতার শিকারদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় সমাজের সব স্তরের মানুষ এতে অংশ নেবে বলে তিনি আশাবাদী।

সাম্প্রতিক আইনগত অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, বন সংরক্ষণে দুটি যুগান্তকারী আইন পাস হয়েছে, যা প্রাকৃতিক বনে হস্তক্ষেপ বন্ধ করেছে এবং বননির্ভর জনগোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দিয়েছে। শিগগিরই জলাভূমি সংরক্ষণ আইনও পাস হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

পরিবেশের বর্তমান বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সাভারকে ইতোমধ্যে পরিবেশগতভাবে অক্ষয়িত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। “বাংলাদেশ বহু বছর ধরে বায়ুদূষণে শীর্ষে রয়েছে। এটি এক বছরে পরিবর্তন সম্ভব নয়, তবে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ শুরু হয়েছে।” তিনি আরও জানান, দূষণকারী ইটভাটা ও অন্যান্য ইউনিট স্থানান্তর করা হচ্ছে, শ্রমিকরা নতুন স্থানে কৃষি-সম্পৃক্ত কাজে যুক্ত হবেন।

উপদেষ্টা বলেন, নগর পরিবেশের উন্নতি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ আর পরিবেশ সূচকের একেবারে নিম্নস্থানে নেই। “সরকার ও নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়েছে, তথ্যপ্রাপ্তি সহজ হয়েছে এবং মত প্রকাশ ও অংশগ্রহণের ক্ষেত্র প্রসারিত হয়েছে।”

১১ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে ৬২ দেশের ৮৫ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।