ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • অন্যান্য

জিব্রাল্টারে ধর্মহীন মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে

বিপ্লব হোসাইন
নভেম্বর ১৩, ২০২৫ ৫:৩৫ অপরাহ্ণ । ১৩৫ জন

জিব্রাল্টারের সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী, ২০১২ সালের পর থেকে ধর্মহীন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। যদিও রোমান ক্যাথলিক ধর্ম এখনও ‘রক দ্বীপে’ (Rock) সবচেয়ে প্রভাবশালী, তবে সামগ্রিক জনসংখ্যার অনুপাতে তাদের অংশ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

২০২২ সালের আদমশুমারি অনুসারে, জিব্রাল্টারের ৮৪ শতাংশ মানুষ নিজেদের ধর্মীয় হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন, যার মধ্যে অধিকাংশই রোমান ক্যাথলিক। তবে একই সময়ে যারা বলেছেন তাদের কোনো ধর্মীয় সম্পৃক্ততা নেই- সেই সংখ্যায় ১৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে, যা দেশটিতে ধর্মীয় চিত্রে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

ইহুদি জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে- ২০১২ সালে যেখানে তাদের সংখ্যা ছিল ৭৬৩ (২.৪%), ২০২২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১,০৭০ (২.৮%)। হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৬২৮ (২%) থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯৩ (১.৮%)। একইভাবে, অন্যান্য খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সংখ্যা ১,২৩২ (৩.৮%) থেকে বেড়ে ১,৫০৩ (৪%) হয়েছে।

এছাড়া অন্যান্য ধর্মের অনুসারী, কিংবা যারা তাদের ধর্মীয় সম্পৃক্ততা প্রকাশ করেননি- তাদের সংখ্যা ৪০৯ (১.৩%) থেকে বেড়ে ৭৭৯ (২%) হয়েছে।

তবে দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষণে দেখা যায়, রোমান ক্যাথলিক জনসংখ্যা সংখ্যাগতভাবে এখনও সর্বাধিক হলেও তাদের শতাংশ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। ১৯৭০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ক্যাথলিকদের অংশ ৫ শতাংশ কমে যায়, এবং পরবর্তী দশকে আরও ৮.৬ শতাংশ হ্রাস পায়। বর্তমানে তারা মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।

অন্যদিকে, মুসলিম জনসংখ্যা ১৯৭০ সালে রকের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী ছিল। ২০০০ সালের শুরুর দিকে এ সংখ্যা কমে গেলেও ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইংল্যান্ডের চার্চের সদস্যসংখ্যা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল, যদিও ১৯৭০ সালের ৭.৯% থেকে তা সামান্য কমে বর্তমানে ৬% এর কাছাকাছি নেমে এসেছে।

সবচেয়ে বড় পরিবর্তন দেখা গেছে ‘ধর্মহীন’ জনগোষ্ঠীর মধ্যে। ২০০১ সালের আগে জিব্রাল্টারের আদমশুমারিতে ‘কোনো ধর্ম নেই’ এমন বিকল্পই ছিল না। সে বছর মাত্র ৩ শতাংশেরও কম মানুষ নিজেদের অ-ধর্মীয় হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। ২০১২ সালে এ হার দাঁড়ায় ৭% এরও বেশি, আর ২০২২ সালের আদমশুমারিতে তা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নবনির্বাচিত বিশপ চার্লস অ্যাজোপার্ডি বলেন, “আমি এই প্রবণতা নিয়ে চিন্তিত নই। আমার বিশ্বাস, মানুষের মধ্যে ইতিবাচক নৈতিক মূল্যবোধ থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ— তা সে ধর্মীয় হোক বা না হোক।”

এই পরিবর্তন জিব্রাল্টারের সমাজে ধর্মীয় চিন্তা ও পরিচয়ের নতুন বাস্তবতা তুলে ধরছে, যেখানে ব্যক্তিগত নৈতিকতা এবং আধ্যাত্মিকতার ধারণা ধর্মীয় আনুগত্যের সীমা ছাড়িয়ে আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠছে।

তথ্যসুত্র: জিবিসি