দেশের শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টাইফয়েড টিকাদানকে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেন, খাদ্য ও পানির নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ হলেও টিকা নেওয়াই শিশুর দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায়।
রোববার (১২ অক্টোবর) ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে আয়োজিত টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ইউনিসেফ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
ডা. বিধান রঞ্জন বলেন, “আমাদের দেশে টাইফয়েডের প্রকোপ বেশি এবং এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বেড়ে যাওয়ায় অনেক অ্যান্টিবায়োটিক আর কার্যকর হচ্ছে না। ফলে প্রতিবছর অনেক শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।” তিনি আরও বলেন, “খাদ্য গ্রহণে সতর্কতা, নিয়মিত হাত ধোয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং টিকা নেওয়া-সব মিলিয়েই টাইফয়েড প্রতিরোধ সম্ভব। তাই টিকাদানের গুরুত্ব সম্পর্কে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।”
তিনি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, টিকাদান ক্যাম্পেইনের ব্যাপক প্রচার করতে হবে, যাতে সব শিশু টিকা গ্রহণে আগ্রহী হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাবের হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিম লিডার সুধীর যোশী এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ অব হেলথ চন্দ্রশেখর সোলায়মান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এক মাসব্যাপী এই কর্মসূচিতে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি বা সমমানের সব শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে এক ডোজ টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে, যাতে শিশুরা টিকা গ্রহণে উৎসাহী হয় এবং টাইফয়েড প্রতিরোধে সচেতন থাকে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুদের টাইফয়েড থেকে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত করা গেলে এই রোগে মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।


