জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও জ্বালানি রূপান্তরে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও শক্তিশালী সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত “টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভ – ক্লাইমেট অ্যান্ড এনার্জি” উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য কঠিন বাস্তবতা। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অভিযোজন আমাদের জীবনের অংশ হলেও এখন প্রভাবের তীব্রতা আমাদের সীমা অতিক্রম করেছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশকে ‘সহনশীল সমাজ’ হিসেবে তুলে ধরা মানবাধিকারের প্রতি অবিচার।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, অভিযোজন যথেষ্ট নয় যদি বৈশ্বিক নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হয়। সতর্ক করে তিনি জানান, ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস লক্ষ্য অর্জন ব্যর্থ হলে কেবল অভিযোজন দিয়ে বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারবে না।
বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি অর্জনের লক্ষ্য নিয়েছে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সরকারি দপ্তরে সৌর প্যানেল স্থাপন বাধ্যতামূলক করা, ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প ও বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা অনুসন্ধানসহ নানা উদ্যোগ ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে জ্বালানি রূপান্তরের জন্য ইউরোপের প্রযুক্তি হস্তান্তর ও সাশ্রয়ী অর্থায়নের সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি পানি নিরাপত্তা সংকটের কথাও তুলে ধরেন-লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস ও পৃষ্ঠস্থ পানির ওপর চাপ বৃদ্ধি-যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও তীব্র করছে। এ সময় তিনি বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, জলাভূমি পুনরুদ্ধার এবং প্রাকৃতিক সমাধানে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “ইউরোপ সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে এই সহযাত্রা আরও শক্তিশালী হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

অনুষ্ঠানে ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লট্জ, ইউরোপীয় কমিশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক ও জলবায়ু অর্থায়ন পরিচালক ডায়ানা আক্কোনচিয়া বক্তব্য রাখেন। এছাড়া নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত জোরিস ভ্যান বোমেল, ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও তরুণ কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা ও অতিথিবৃন্দ যৌথভাবে “টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভ – ক্লাইমেট অ্যান্ড এনার্জি” উদ্বোধন করেন।


