ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

শীতের পোশাকের যত্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ১১, ২০২৫ ৫:৪৪ অপরাহ্ণ । ২০ জন

রাজধানীতে কিছুটা দেরিতেই হলেও শীতের তীব্রতা অনুভূত হতে করেছে। বাহারি শীতের পোশাক পরছেন সবাই। শীতকালে যেমন শরীরের যত্ন নেওয়া দরকার, তেমনই শীতের পোশাকগুলোরও যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। সাধারণ পোশাকের তুলনায় উষ্ণ পোশাকের দরকার বিশেষ যত্ন।

তাপ ধরে রাখার জন্য শীতের পোশাকে ভারী ও সূক্ষ্মভাবে তৈরি তন্তু ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছে উল, ক্যাশমিয়ার (ক্যাশমিয়ার ছাগলের লোম থেকে তৈরি), ফ্ল্যানেল ফ্লিস (তুলতুলে ধরনের কাপড়), পলিয়েস্টার এবং নাইলন। এছাড়াও, ব্যবহৃত হয় ভেলভেট, টুইড এবং লেদার। আর ধোয়ার সময় এ ধরনের কাপড় সহজেই তাদের নিজস্ব আকার হারাতে পারে। অনেক সময় কাপড়ে পিলিং হয় অর্থাৎ কাপরের আঁশ ছোট ছোট বলের আকার ধারণ করে, টান পড়তে পারে ও দুর্গন্ধ থেকে যেতে পারে।

ধোয়ার ক্ষেত্রে সঠিক কৌশল অবলম্বন এবং যত্নসহকারে সংরক্ষণ করলে এই পরিধেয়গুলো দীর্ঘদিন নতুনের মতো রাখা সম্ভব।

মেশিনে ধোয়ার ক্ষেত্রে করণীয়
শীতের পোশাক মেশিনে ধোয়ার সময় পোশাকগুলো সোজা করে না ধুয়ে, উল্টো করে নেওয়া উচিত। কাপড় নরম করার তরল দ্রব্য (ফ্যাব্রিক সফটনার), তীব্র পরিষ্কারক সামগ্রী এবং ব্লিচিং ব্যবহার না করে অল্প পরিমাণ তরল ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে। মেশিনে দিতে হবে সর্বোচ্চ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এতে সোয়েটার সঙ্কুচিত হয়ে যাবে না। অন্য পোশাকে হুক বা বোতাম থাকলে, সেগুলো উলের তন্তুতে আটকে পোশাক নষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই, উলের পোশাকগুলো আলাদা করে ধোয়াই ভালো। এরপর মেশিনে জেন্টেল স্পিন বা সর্বোচ্চ ৫০০ আরপিএম সেট করতে হবে। এক্ষেত্রে, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, মেশিনে ধোয়ার সময় কাপড় চিপে পানি বের করা বা ফাস্ট স্পিন সাইকেল ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। এটিও কাপড়ের মান অনেকাংশে নষ্ট করে ফেলে।

হাতে ধোয়ার সময় করণীয়
হাতে শীতের পোশাক ধোয়ার সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে, ডিটারজেন্ট হতে হবে খুব মৃদু ধরনের। ধোয়ার পর পানি ঝরানোর জন্য পোশাক চিপে ধরা যাবে না কোনো অবস্থাতেই; এর পরিবর্তে, পোশাকটি একটি পরিষ্কার তোয়ালের ওপর বিছিয়ে হালকা চাপ দিয়ে পানি শুষে নিতে হবে। ভেজা অবস্থায় পোশাক ঝুলিয়ে রাখাও একেবারেই ঠিক নয়। কারণ এতে পোশাক নিচের দিকে ঝুলে লম্বা হয়ে যেতে পারে।

আধুনিক ওয়াশিং মেশিন শীতের পোশাকের যত্ন নেয়া সহজ
ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসেই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি শীত পড়ে। হাড় কাঁপানো এসব দিনে হাতে শীতের পোশাক ধোয়া বেশ কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ। ঠিক এখানেই আধুনিক ওয়াশিং মেশিন, বিশেষ করে, স্যামসাংয়ের মতো ব্র্যান্ডের এআই প্রযুক্তিযুক্ত ওয়াশিং মেশিন দরকার পড়ে।

বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ওয়াশিং মেশিন কাপড়ের ধরন নিজে থেকেই শনাক্ত করতে পারে। যেমন, উলের সোয়েটার কিংবা মোটা কার্গো প্যান্ট মেশিনে দিলে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই অনুযায়ী কোমল ও কার্যকর ধোয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। এই মেশিনগুলো বাবল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাপড়ের গভীরে থাকা ময়লা আলতোভাবে তুলে ফেলে। এতে করে মোটা শীতের পোশাকগুলো থাকে নরম ও টেকসই। প্রতিবার কাপড় দেয়ার পর পরিমাণ অনুযায়ী ঠিক যতটুকু প্রয়োজন, শুধুমাত্র ততটুকুই পানি, ডিটার্জেন্ট এবং বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। এতে কাপড়ও পরিষ্কার পরিষ্কার থাকে, আবার অপচয়ও কম হয়।

অত্যাধুনিক ওয়াশিং মেশিন ব্যবহারকারীর অভ্যাস শিখে রাখে। সচরাচর যে সেটিংসে কাপড় ধোয়া হয়, তা মনে রাখে। এটি ধোয়ার কাজকে আরও সহজ, দ্রুত এবং সুবিধাজনক করে দেয়। এমনকি হাতে থাকা ফোনের মাধ্যমেই ওয়াশিং মেশিন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ধোয়া কতদূর হয়েছে তা জানিয়ে দেয় সময় মতো। ঘরের বাইরে থাকলেও পুরো প্রক্রিয়াটি সহজেই পরিচালনা করা যায়। ব্যস্ত নাগরিক জীবনে এটি একটি চমৎকার সুবিধা।

শহুরে ব্যস্ত জীবনের প্রেক্ষাপটে হাত দিয়ে কাপড় ধোয়া অনেকটা সময় নিয়ে বিলাসিতার পর্যায়েই পড়ে। আবার শীতের দিনে কাপড় ধুয়ে শুকানোর জায়গাও কম থাকে। অন্যদিকে, স্মার্ট মেশিনে শীতের কাপড় ধোয়া শারীরিক কষ্ট কমায়, সময় বাঁচায় এবং সূক্ষ্ম এবং স্পর্শকাতর কাপড়গুলোকে নিরাপদ রাখে। উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে এখন শীতের পোশাককে নতুনের মত উষ্ণ এবং দীর্ঘস্থায়ী রাখা আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ।