ঢাকাবুধবার , ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • অন্যান্য

ট্র্যাফিক সার্জেন্টরা শব্দ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানা করতে পারবেন: বিধিমালার সংশোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ২৬, ২০২৫ ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ । ১৫৯ জন

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় নতুন ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫’ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ২৪ নভেম্বর প্রকাশিত এ বিধিমালা ২০০৬ সালের পূর্বের বিধিমালাকে হালনাগাদ করে বিভিন্ন নতুন নির্দেশনা, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও দায়িত্ববণ্টন যুক্ত করেছে।

ট্রাফিক পুলিশের নতুন ক্ষমতা

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগকে আরও শক্তিশালী করতে এবার প্রথমবারের মতো ম্যাজিস্ট্রেটদের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশকেও (সার্জেন্ট বা তার ওপরে) সরাসরি জরিমানা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এখন থেকে বিধি ৬-এর উপবিধি (২), (৩) বা (৪)-এর আওতায় কোনো অপরাধ ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতিতে সংঘটিত হলে ঘটনাস্থলেই জরিমানা আরোপ করা যাবে।

কর্তৃপক্ষের আশা, এই উদ্যোগ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ও কার্যকর ফল বয়ে আনবে।

হর্ন নিয়ন্ত্রণে কঠোর শাস্তি

দেশে শব্দদূষণের অন্যতম বড় উৎস—অনিয়ন্ত্রিত হর্ন। এতদিন হর্নের আমদানি, উৎপাদন, মজুদ বা বিক্রি সংক্রান্ত কোনো শাস্তি ছিল না, ফলে তদারকি ব্যাহত হচ্ছিল।

নতুন বিধিমালায় এ বিষয়ে স্পষ্ট শাস্তিমূলক ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে, যা হর্ন ব্যবহারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

লাউডস্পিকার, সামাজিক অনুষ্ঠান ও নীরব এলাকায় কঠোর নির্দেশনা

নতুন বিধিমালায় জনস্বার্থে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা যুক্ত হয়েছে—

১. কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো পাবলিক প্লেসে লাউডস্পিকার, মাইক, অ্যাম্প্লিফায়ার বা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার নিষিদ্ধ।

২. প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন নিষিদ্ধ।

৩. সামাজিক অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ শব্দসীমা ৯০ ডেসিবল এবং অনুষ্ঠান রাত ৯টার মধ্যে শেষ করতে হবে।

৪. নীরব এলাকায় পটকা, আতশবাজি, হর্নসহ যেকোনো শব্দসৃষ্টিকারী পণ্যের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

৫. রাত্রিকালে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে হবে।

৬. শিল্পকারখানা, জেনারেটর ও যান্ত্রিক কার্যক্রমের শব্দ নিয়ন্ত্রণেও নতুন বিধান যোগ করা হয়েছে।

৭. সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে।

যৌথ পরামর্শ ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা পুনর্মূল্যায়ন

নতুন বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সরকার অংশীজনদের মতামত গ্রহণ, কর্মশালা আয়োজন, মন্ত্রণালয়গুলোর পরামর্শ এবং জনগণের মতামতের ভিত্তিতে খসড়া চূড়ান্ত করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের বেস্ট প্র্যাকটিস পর্যালোচনা করে ২০০৬ সালের বিধিমালার দুর্বল দিকগুলো সংশোধন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে এবং শহুরে জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে।