ঢাকাসোমবার , ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • অন্যান্য

মাটি রক্ষা ছাড়া জলবায়ু স্থিতিশীলতা অসম্ভব: প্রবীণা শ্রীধর

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫ ১:০৮ অপরাহ্ণ । ২৯ জন

মাটি শুধু কৃষি উৎপাদনের ভিত্তি নয়, বরং এটি কার্বন সংরক্ষণ, জলচক্র নিয়ন্ত্রণ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এক অপরিহার্য উপাদান। COP30-এর সাম্প্রতিক বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানি হ্রাসে পদক্ষেপের অভাবের পাশাপাশি মাটির অবহেলা উদ্বেগজনক, এমন মন্তব্য করেছেন মাটি বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান নীতি কর্মকর্তা প্রবীণা শ্রীধর।

শ্রীধর বলেন, মাটিকে এখনও কেবল কৃষিকাজের একটি উপ-উপাদান হিসেবে দেখা হচ্ছে, অথচ এটি জলবায়ু স্থিতিশীলতা, পুনর্জন্মমূলক ব্যবস্থাপনা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। COP30-এ কিছু পদক্ষেপ যেমন নেট-জিরো ল্যান্ড ডিগ্রেডেশন ইনভেস্টমেন্ট (RAIZ) এবং ৯ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ২১০ মিলিয়ন হেক্টর মাটির পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিলেও, বৈশ্বিক খরচের তুলনায় এগুলো নগণ্য।

তিনি আরও জানান, মাটির স্বাস্থ্য শুধু খাদ্য উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি মহাসাগরের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম কার্বন সিঙ্ক। মাটির উপরে থাকা কার্বন বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ধরে রাখার জন্য অপরিহার্য, এবং পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের অর্ধেকের বাসস্থান মাটির সঙ্গে সম্পর্কিত। COP30-এ মাটি পুনরুদ্ধারের জন্য কোনও আইনগত বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা না থাকায়, এটি এখনও বৈশ্বিক জলবায়ু নিরাপত্তায় অপর্যাপ্ত।

শ্রীধর সতর্ক করে বলেন, ক্ষুদ্র কৃষকরা এখনও জলবায়ু তহবিলের মধ্যে ন্যায্য অংশ পাচ্ছেন না। বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনের ৩০% তারা উৎপাদন করলেও, জলবায়ু তহবিলের মাত্র ১% তাদের হাতে আসে। তাই মাটি পুনরুদ্ধারকে যে কোনো দেশের জলবায়ু কর্মপরিকল্পনার কেন্দ্রীয় উপাদান হিসেবে গ্রহণ করা জরুরি।

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, মৃত ভূমি থেকে কার্বন নির্গমন বেড়ে গেলে বৈশ্বিক জলবায়ুর জন্য বিপজ্জনক প্রভাব সৃষ্টি হবে। তাই জৈব পদার্থের মাত্রা ৩%-এ ফিরিয়ে আনা এবং মাটির স্বাস্থ্য রক্ষাকে স্থানীয়ভাবে কার্যকর করা সময়ের দাবি। মাটি শুধু খাদ্য উৎপাদনের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জলবায়ু, জীববৈচিত্র্য এবং মানুষের নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।

COP30-এর ফলাফল স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, মাটির প্রাপ্য গুরুত্ব এখনও বৈশ্বিক জলবায়ু নীতিতে প্রতিফলিত হচ্ছে না। তাই বিশ্ব ও স্থানীয় পর্যায়ে নীতি প্রণয়ন এবং অর্থায়নে এখনই মাটি-কেন্দ্রিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

তথ্যসুত্র: আর্থ ডট ওআরজি