যাদের ডায়াবেটিস, স্থূলতা বা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের ভিসা বাতিল হতে পারে-এমন একটি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, এসব স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত আবেদনকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য “পাবলিক চার্জ” বা অর্থনৈতিকভাবে বোঝা হয়ে উঠতে পারেন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষয় করতে পারেন। তাই ভিসা দেওয়ার আগে এসব বিষয় যাচাই করতে হবে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কেএফএফ হেলথ নিউজ জানায়, নতুন নির্দেশনাটি মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে নোটিশ আকারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ভিসা প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র সংক্রামক রোগ, টিকাদানের ইতিহাস, মানসিক অবস্থা ও শারীরিক সুস্থতার মতো বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হতো। তবে এবার হৃদ্রোগ, শ্বাসযন্ত্র, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, মেটাবলিক, স্নায়বিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাকেও তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
নির্দেশিকায় ভিসা কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে, আবেদনকারীর চিকিৎসা ব্যয় বহনের সক্ষমতা মূল্যায়ন করতে হবে। কারণ এসব রোগের চিকিৎসায় কয়েক লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
অলাভজনক আইনি সহায়তা সংস্থা ক্যাথলিক লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নেটওয়ার্কের সিনিয়র অ্যাটর্নি চার্লস হুইলার বলেন, “এই নির্দেশনা মূলত স্থায়ী বসবাসের (পারমানেন্ট রেসিডেন্সি) আবেদনকারীদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলবে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, চিকিৎসাসংক্রান্ত মূল্যায়নের ক্ষমতা ভিসা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, যাদের চিকিৎসা বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা নেই।”
স্টেট ডিপার্টমেন্টের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আবেদনকারী বা তার পরিবারের সদস্যদের কোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগ, শারীরিক অক্ষমতা বা বিশেষ যত্নের প্রয়োজন থাকলে তা বিবেচনায় নিতে হবে। এমনকি নির্ভরশীল সদস্যের অসুস্থতার কারণে আবেদনকারীর কর্মক্ষমতা প্রভাবিত হতে পারে কিনা, সেটিও যাচাই করতে বলা হয়েছে।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন আইনজীবী সোফিয়া জেনোভেস বলেন, “এই নীতিমালা মূলত ভিসা কর্মকর্তাদের আবেদনকারীদের চিকিৎসা ইতিহাস বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্ভাব্য চিকিৎসা ব্যয় ও কর্মক্ষমতা মূল্যায়নে উৎসাহিত করছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন এই নির্দেশনা অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলবে এবং দীর্ঘমেয়াদি বা ব্যয়বহুল রোগে আক্রান্তদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।


