পঞ্চগড়ে হিমশীতল বাতাস ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের প্রকোপ তীব্র আকার ধারণ করেছে। কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে জেলার সাধারণ মানুষ। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে গোটা জনপদ, দুপুর পর্যন্ত মিলছে না সূর্যের দেখা। গতরাত থেকেই হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে এ অঞ্চলে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৬ শতাংশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায়।
আবহাওয়া অফিস জানায়, কয়েক দিন ধরে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় উত্তরের হিমেল বাতাসের সঙ্গে ঘন কুয়াশায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশার সঙ্গে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। রাতভর হালকা থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে পুরো এলাকা। হিমেল বাতাস ও কুয়াশার কারণে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, রিকশা ও ভ্যানচালকরা সীমাহীন কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। শীতের কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ রিকশা-ভ্যানে চলাচল কমিয়ে দিয়েছে। এতে দৈনন্দিন আয় কমে গেছে শ্রমজীবী মানুষের। শীত থেকে বাঁচতে সকালবেলা গরম কাপড় পরে বের হওয়ার পাশাপাশি অনেককে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।
ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে।
অন্যদিকে, শীতের প্রকোপ বাড়ায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক রোগী সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় অবস্থান নিতে হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও আশপাশের এলাকায় কনকনে হিমশীতল ঠান্ডায় শীত জেঁকে বসেছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তখন বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ।”


