ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক কাঠামো পুনর্গঠনে নতুন নীতি সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত খেলাপি অবস্থায় থাকা সব ধরনের ঋণ এখন বিশেষ সুবিধায় পুনঃতফসিলের আওতায় আসবে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিরূপমানে থাকা যেকোনো খেলাপি ঋণ সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে, যার মধ্যে দুই বছর পর্যন্ত গ্রেস পিরিয়ড রাখা সম্ভব। এর ফলে পূর্বে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত ঋণগ্রহীতারাও নতুন করে বিশেষ পুনঃতফসিল সুবিধা পাওয়ার সুযোগ পাবেন।
এছাড়া প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অশ্রেণিকৃত মেয়াদি ঋণ, যার মধ্যে পূর্বে পুনঃতফসিল করা ঋণও রয়েছে, সেগুলো বিআরপিডি সার্কুলার নং ১৬/২০২২-এ নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে পুনর্গঠনের সুযোগ পাবে।
এক্সিট সুবিধার ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিথিলতা দিয়েছে। পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ডাউনপেমেন্টের পাশাপাশি এক্সিট সুবিধার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো যাবে। যদিও কিস্তি পরিশোধের নিয়ম অপরিবর্তিত থাকবে, তবে বছরে মোট পরিশোধের পরিমাণ কমপক্ষে ঋণের ২০ শতাংশ হতে হবে।
এই সময় সংশ্লিষ্ট ঋণগুলোকে ‘এক্সিট (SMA)’ ক্যাটাগরিতে রাখতে হবে এবং সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক হবে। প্রকৃত আদায় না হওয়া পর্যন্ত পূর্বে রাখা স্পেসিফিক প্রভিশন আয় হিসেবে দেখানো যাবে না।
তিনটি মাসিক বা একটি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণটি পুনরায় নিয়মিত শ্রেণিকরণ প্রক্রিয়ার আওতায় নিতে হবে। সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ঐ প্রতিষ্ঠানের নামে নতুন ঋণ অনুমোদন দেওয়া যাবে না।
বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন নীতিমালা ব্যাংকগুলোর ঋণ পুনরুদ্ধারে বাড়তি নমনীয়তা দেবে। তবে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে ঋণের ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।


