ঢাকাসোমবার , ৬ অক্টোবর ২০২৫
  • অন্যান্য

হিমালয়ে তুষারঝড়ে আটকে হাজার পর্যটক, উদ্ধার অভিযান চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ৬, ২০২৫ ৩:৪৮ অপরাহ্ণ । ৬৪ জন

প্রবল বৃষ্টি ও ধসে বিপর্যস্ত ভারতের উত্তরাঞ্চলের পাশাপাশি এবার বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে হিমালয়ও। গত দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও তুষারঝড়ের কারণে মাউন্ট এভারেস্টের পূর্বে তিব্বত সংলগ্ন এলাকায় আটকা পড়েছেন হাজারেরও বেশি পর্যটক।

চীনের সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫০ জন পর্যটককে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের উদ্ধারে কাজ করছে উদ্ধারকারী দল। তবে আবহাওয়া পরিস্থিতি এখনও প্রতিকূল হওয়ায় অভিযান ধীরগতিতে চলছে।

শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া তুষারপাত ও প্রবল বর্ষণে এভারেস্টের কাংশুং অঞ্চলের কর্মা উপত্যকা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ৪,২০০ মিটার (১৩,৮০০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত এই উপত্যকায় চীনের টানা ছুটির সময় পর্যটকের ভিড় ছিল হাজারেরও বেশি। আচমকা প্রাকৃতিক দুর্যোগে তারা সেখানে আটকে যান।

রোববার আবহাওয়া কিছুটা উন্নতি হলে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। স্থানীয় গ্রামবাসীরাও সেনা ও উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অভিযানে অংশ নিয়েছেন।

একজন পর্যটক, চেন গেশুয়াংয়ে, জানান-“আমাদের দলে ১৮ জন ছিল। প্রচণ্ড ঠান্ডায় অনেকের হাইপোথার্মিয়া হয়েছিল। আমাদের গাইডও অবাক হয়ে বলেছিলেন, জীবনে অক্টোবরে এমন আবহাওয়া তিনি দেখেননি।”

অন্য এক ট্রেকার এরিক ওয়েন বলেন, “আমাদের কাছে ছিল মাত্র কয়েকটি তাঁবু। বাধ্য হয়ে এক একটি তাঁবুতে ১০ জন করে থাকতে হয়েছে। তুষারপাত এতটাই তীব্র ছিল যে প্রতি ১০ মিনিট পরপর আমাদের তুষার সরাতে হচ্ছিল, না হলে তাঁবু ভেঙে পড়ত।”

তুষারঝড়ের মধ্যে অন্তত তিনজন ট্রেকার হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন, তবে তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে একই সময়ে ভারতের উত্তরাঞ্চলেও প্রবল বর্ষণে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও দার্জিলিং অঞ্চলে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে; কোথাও সেতু ভেঙে পড়েছে, কোথাও ধসে বাড়িঘর ও সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে মিরিক ও সুখিয়াপোখরি। মিরিকেই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিচ্ছে জাতীয় ও রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীসহ স্থানীয় প্রশাসন।

রোববার রাতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় আটকে পড়া পর্যটকদের অনেকেই ধীরে ধীরে নিচে নামতে শুরু করেছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।