ঢাকারবিবার , ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • অন্যান্য

জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নারীরা: পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ৭, ২০২৫ ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ । ৩৮ জন

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দেশের নারীরা বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, পানি সংকট, ভূমি ক্ষয় এবং খাদ্য অনিরাপত্তা নারীদের জীবনে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ পরিস্থিতিতে লবণসহিষ্ণু খাদ্যপণ্য সংরক্ষণ, পরিবেশবান্ধব উপকরণ তৈরি এবং বিকল্প আয়ের পথ তৈরি করতেই হবে।”

নারীদের অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “নারী উদ্যোক্তারা শক্তিশালী হলে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বাড়ে, শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পুষ্টি উন্নত হয়। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই দেশের অর্থনৈতিক রূপান্তর সবচেয়ে বেশি এগোচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “নারীরা যখন স্বাবলম্বী হন, তখন একটি পরিবার, সমাজ ও জাতি এগিয়ে যায়। গ্রামীণ এলাকার নারী উদ্যোক্তারা সামাজিক বাধা অতিক্রম করে পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও মূল্য সংযোজনমূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন-যা জাতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।”

নারী উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে বাজারে প্রবেশাধিকার, প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, আর্থিক সহায়তা ও নীতিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নারীদের স্থানীয় পণ্যের বিপণন ও গ্রাহক তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখছে। ঘরে বসেই অনেক নারী হস্তশিল্প, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যপণ্য, পোশাক, প্রসাধনীসহ নানা ঐতিহ্যবাহী পণ্য তৈরি করে সফল হচ্ছেন।”

বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অবস্থান আরও শক্তিশালী করা সম্ভব বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “জামদানি, নকশীকাঁথা, মাটির পণ্য, স্থানীয় খাদ্যপণ্যের মতো ঐতিহ্যকে বিশ্বে তুলে ধরতে নারী নেতৃত্বই সবচেয়ে সম্ভাবনাময়। নারী উদ্যোক্তাদের বাজার সম্প্রসারণ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং সমান সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি।”

রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, “নারী ও তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি। রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-সবাইকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল পিএলসির চেয়ারম্যান আব্দুন নাসের খান, সিনিয়র আইনজীবী সারা হোসেন এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের মহাসচিব শেখ মোহাম্মদ মেহেদী আহসানসহ অন্যান্যরা।