বছর শেষ হতে চলেছে। শীতকালীন সবজিতে খুলনার বাজার সয়লাব থাকলেও ভোক্তারা দাম কমার কোনো স্বস্তিকর খবর পাচ্ছেন না। ভরা মৌসুমেও সব ধরনের সবজির দাম অত্যন্ত বেশি। বিশেষ করে পেঁয়াজের কেজি প্রতি দাম ৩০-৩৫ টাকা বেড়েছে। আমদানির খবর বাজারে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
ভোক্তারা অভিযোগ করেছেন, সব সরকারই সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়। জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, কুশি ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০ টাকা, বাঁধাকপি কেজি ৪০ টাকা, ফুলকপি কেজি ৪০ টাকা, ওলকপি ৫০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, শিম ৭০ টাকা, নতুন আলু ৭০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, জলপাই ৬০ টাকা এবং কাঁচকলা হালি ৪০ টাকা।
অন্যদিকে পেঁয়াজের দাম ১৪০ টাকা, রসুন ৮০ টাকা, আদা ২০০ টাকা। মাংস ও অন্যান্য দামের মধ্যে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০-৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০ টাকা এবং ডিমের হালি উল্লেখযোগ্য।
শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দামে ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে। গল্লামারী বাজারে সবজির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি, আর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার ও নিউমার্কেট কাচাবাজারে দাম কম বা সমান।
যেখানে দুদিন আগে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ১১০-১১৫ টাকায়, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। গল্লামারী বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা রহমান বলেন, “সরবরাহ কম থাকার কারণে দাম বেড়েছে। তবে নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। শিগগিরই দাম কমবে।”
পাইকারি ব্যবসায়ী মো. আবুল খায়ের বলেন, “চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাচ্ছি না। তাই দাম বেড়ে যাচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ এলে দাম কমে যাবে।”
ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও ভরা মৌসুমে কেন দাম বেশি থাকে। পেঁয়াজের দাম কোনো ঘোষণা ছাড়াই কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা বেড়ে গেছে। এইভাবে দাম বাড়তে থাকলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন কঠিন হয়ে যাবে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের আয় বাড়েনি, কিন্তু জীবিকার খরচ বেড়ে গেছে। মাঠ পর্যায়ের তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের লোক দেখানো অভিযানকেও দায়ী করছেন তারা।
বেসরকারি এনজিওতে কর্মরত এনামুল হক বলেন, “এইভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়লে আমাদের মত নিম্নআয়ের মানুষ কী করে চলবে। আশা করেছিলাম সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাজারে স্বস্তি ফিরবে। কিন্তু মনে হচ্ছে সরকার সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়।”
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, “পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। ইতোমধ্যেই নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। দ্রুতই দাম কমে যাবে।”


