একসময় দেশে কোটিপতি হওয়া মানে ছিল বিশেষ মর্যাদা ও আর্থিক সাফল্যের প্রতীক। তবে মূল্যস্ফীতি ও সম্পদের দাম বাড়ার ফলে এখন কোটি টাকা আগের মতো বিরল নয়। তবুও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য কোটিপতি হওয়া এখনো একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক মাইলফলক। এই বাস্তবতায় গ্রাহকদের জন্য কোটিপতি স্কিম চালু রেখেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর একটি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল)।
ইস্টার্ন ব্যাংকের কোটিপতি স্কিম মূলত ডিপিএস ও এফডিআরের সমন্বিত একটি সঞ্চয় পদ্ধতি। এতে গ্রাহক চাইলে এককালীন এক লাখ টাকা প্রাথমিক জমা দিয়ে অথবা প্রাথমিক জমা ছাড়াই নির্দিষ্ট সময় ধরে মাসিক কিস্তি জমা দিয়ে মেয়াদ শেষে এক কোটি টাকা অর্জন করতে পারেন।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এই স্কিমের মেয়াদ ৫ বছর থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত। গ্রাহকরা ৫, ৮, ১০, ১২, ১৫, ১৮ ও ২০ বছর-এই সাতটি মেয়াদের যেকোনো একটি বেছে নিতে পারবেন।
পাঁচ বছর মেয়াদে এক লাখ টাকা প্রাথমিক জমা দিলে মাসিক কিস্তি দিতে হবে ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। প্রাথমিক জমা ছাড়া এই মেয়াদে কিস্তি দাঁড়াবে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ টাকা। আট বছর মেয়াদে প্রাথমিক জমা ছাড়া মাসিক কিস্তি ৭১ হাজার টাকা এবং এক লাখ টাকা জমাসহ কিস্তি ৬৯ হাজার ৬০০ টাকা।
১০ বছর মেয়াদে প্রাথমিক জমা ছাড়া কিস্তি হবে ৭১ হাজার টাকা, আর জমাসহ কিস্তি হবে ৫০ হাজার ১০০ টাকা। ১২ বছর মেয়াদে কিস্তি হবে যথাক্রমে ৩৮ হাজার ৬০০ টাকা ও ৩৭ হাজার ৪০০ টাকা। ১৫ বছর মেয়াদে এই অঙ্ক নেমে আসবে ২৬ হাজার ৩০০ টাকা ও ২৫ হাজার ৩০০ টাকায়।
১৮ বছর মেয়াদে প্রাথমিক জমা ছাড়া কিস্তি ১৮ হাজার ৬০০ টাকা এবং জমাসহ ১৭ হাজার ৬০০ টাকা। সর্বোচ্চ ২০ বছর মেয়াদে মাসিক কিস্তি মাত্র ১৪ হাজার ৯০০ টাকা বা প্রাথমিক জমাসহ ১৪ হাজার টাকা।
ইস্টার্ন ব্যাংকের যেকোনো শাখায় এই স্কিম খোলা যাবে। একজন গ্রাহক একাধিক কোটিপতি স্কিম খুলতে পারবেন। ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব থাকলে সেখান থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাসিক কিস্তি কেটে নেওয়ার সুবিধাও রয়েছে। পাশাপাশি এই স্কিমের বিপরীতে জমার ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
হিসাব খুলতে প্রয়োজন হবে গ্রাহকের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র, নমিনির ছবি ও এনআইডি, ব্যাংকের একজন হিসাবধারী পরিচয়দানকারী এবং নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর। জরুরি যোগাযোগের জন্য একজন ব্যক্তির নাম ও ঠিকানাও দিতে হবে।
মেয়াদের আগে হিসাব ভাঙলে সুদের ক্ষেত্রে শর্ত রয়েছে। এক বছরের আগে হিসাব ভাঙলে শুধু জমা টাকা ফেরত পাওয়া যাবে, কোনো সুদ দেওয়া হবে না। এক থেকে তিন বছরের মধ্যে ভাঙলে সঞ্চয়ী হিসাবের সুদ প্রযোজ্য হবে। আর তিন বছর পর হিসাব ভাঙলে নির্ধারিত কোটিপতি স্কিমের সুদের চেয়ে ২ শতাংশ কম হারে সুদ দেওয়া হবে।
আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে আগে সঞ্চয়, পরে খরচ-এই নীতি মেনে চললে সীমিত আয়ের মানুষও দীর্ঘমেয়াদে বড় অঙ্কের সম্পদ গড়ে তুলতে পারেন। সেই লক্ষ্যেই ইস্টার্ন ব্যাংকের কোটিপতি স্কিম মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীদের জন্য একটি কার্যকর সঞ্চয় বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


