খুলনার বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম লাফিয়ে বেড়েছে দ্বিগুণ। গত সপ্তাহে কিছুটা কম থাকলেও গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সরবরাহ সংকট তৈরি হওয়ায় আবারও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ ক্রেতাদের।
রোববার (৩ আগস্ট) খুলনার মিস্ত্রিপাড়া, গল্লামারি, খালিশপুর, নতুন বাজার ও দৌলতপুর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সবজির বাজারে আগুন
বাজারে পুঁইশাক ৩০–৪০ টাকা, বেগুন ৭০–৮০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা (প্রতি পিস), লালশাক ৩০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, কাঁচকলা ২০ টাকা হালি এবং শসা ৫০–৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গল্লামারি বাজারের সবজি বিক্রেতা শরীফ মোল্যা বলেন, “বৃষ্টির কারণে গ্রাম থেকে সবজি আসছে না। যা আসছে তা দামের কারণে অনেকেই কিনতে পারছেন না।”
দৌলতপুরের বিক্রেতা সোবাহান মিয়া বলেন, “এই সপ্তাহে কাঁচা মরিচের দাম আবার বাড়ছে। পাইকারি বাজারেই সবজির সরবরাহ কম, দামও বেশি।”
মাংস ও মাছের বাজারেও ঊর্ধ্বগতি

মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০–১৭০ টাকা, সোনালি ২৮০–২৯০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ২৮০–৩০০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১৫০ টাকা কেজি।
মাছের বাজারেও ক্রমেই বাড়ছে দাম।
কই মাছ: ২২০–২৫০ টাকা, রুই: ২৫০–৩০০ টাকা, টেংরা: ৫০০–৫৫০ টাকা, পাবদা: ৩৫০–৪০০ টাকা, চিংড়ি: ৫০০–৬০০ টাকা, ছোট মাছ: ৩০০–৪০০ টাকা, তেলাপিয়া: ১৮০–২৪০ টাকা, ভেটকি: ৪০০–৫০০ টাকা, পাঙাস: ১৮০–২২০ টাকা
মাছ বিক্রেতা আজম হোসেন বলেন, “বৃষ্টির কারণে মাছ কম আসছে। ৫০–১০০ টাকা বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। বিক্রি না হলে মাছ নষ্ট হয়ে যায়, তাই অনেকেই কম পরিমাণে তুলছেন।”
ক্রেতাদের ক্ষোভ
নতুন বাজারে আসা ক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, “১০০ টাকায় এখন দুই পদের সবজি কেনা কঠিন। কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকা! ব্যবসায়ীরা বৃষ্টির অজুহাতে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন।”
পাইকারি বাজারেও সংকট
পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী রিংকু মিয়া জানান, “বৃষ্টিতে অনেক জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। আবার ফলন বাড়লে দাম কমে যাবে। তবুও পরিবহন ও শ্রমিক খরচ বেড়েছে, লাভ না হলে ব্যবসা চলবে না।”
বৃষ্টির প্রভাব পড়ে খুলনার বাজারে একদিকে সরবরাহ কমেছে, অন্যদিকে পণ্যের দাম বেড়েছে। সাধারণ মানুষের নিত্যব্যয়ের চাপে বাড়ছে ভোগান্তি। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জরুরি উদ্যোগ ও নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।


