তিন মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে ভারত থেকে আবারও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া চারটায় ভারতীয় একটি ট্রাকে ৩০ টন পেঁয়াজ দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করে। আমদানির খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই সকাল থেকে দেশের অস্থির পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি ফিরতে থাকে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমে যায়। যেখানে সকাল পর্যন্ত দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ১৩০-১৫০ টাকা, সেখানে দাম নেমে আসে ৯০-১০০ টাকায়।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা জানান, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় গত তিন মাস ধরে দেশে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। আমদানি পুনরায় চালু হওয়ায় সেই অস্থিরতা অনেকটাই কমেছে।
এর আগে সর্বশেষ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল গত ৩০ আগস্ট। দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ে ভারতীয় চাষিরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, ভারতের অনেক অঞ্চলে ২ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেও চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। হতাশ অনেক কৃষক গণমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন, এমনকি প্রতিবাদস্বরূপ পেঁয়াজের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানও করেন কিছু কৃষক। অবশেষে বাংলাদেশে আমদানি শুরু হওয়ায় ভারতীয় চাষিদের মুখেও ফিরেছে স্বস্তি।
রোববার হিলি স্থলবন্দরের মেসার্স রকি ট্রেডার্স ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে। উত্তর প্রদেশের ইন্দর এলাকা থেকে আসা এসব পেঁয়াজের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আতিক হাসান জানান, প্রতি টন পেঁয়াজের এলসি খোলা হয়েছে ২৫০ মার্কিন ডলারে। ভারতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা হয়েছে ১২ রুপিতে, আর পরিবহনসহ মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ১৮ রুপিতে। শুল্কায়নসহ সব খরচ বাদ দিয়ে বাংলাদেশে পাইকারি ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে বলে জানান তিনি। এসব পেঁয়াজ রাতেই ঢাকায় পাঠানো হবে।
গত সপ্তাহে হিলি ও আশপাশের বাজারগুলোতে দেশি শুকনা পেঁয়াজের দাম ছিল ১২০-১৩০ টাকা, আর নতুন পাতা পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা। দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে তাই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন জানান, কৃষি মন্ত্রণালয় চারটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ১২০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। একজন আমদানিকারক প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।
উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী ইউসুফ আলী বলেন, আমদানিকৃত পেঁয়াজ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খালাসের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সরকার অন্য নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকবে।


