ইউরোপের দক্ষিণতম দেশ গ্রিসের গাভদোস দ্বীপের কাছে একটি মাছধরার নৌকা থেকে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ৫৪৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে গ্রিসের কোস্টগার্ড। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গ্রিসে পৌঁছানো অভিবাসীদের মধ্যে এটি অন্যতম বড় একটি দল বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গ্রিক কোস্টগার্ড এক বিবৃতিতে জানায়, শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) গাভদোস দ্বীপ থেকে প্রায় ১৬ নটিক্যাল মাইল বা ২৯ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে তল্লাশি অভিযানের সময় নৌকাটি শনাক্ত করা হয়। পরে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে নৌকায় থাকা সবাইকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া সবাই সুস্থ রয়েছেন। তাদের নিকটবর্তী দ্বীপ ক্রিটের আগিয়া গালিনি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের একটি টহল জাহাজ প্রথমে নৌকাটি দেখতে পায়। এরপর গ্রিক কোস্টগার্ডের তিনটি জাহাজ, ফ্রন্টেক্সের তিনটি জাহাজ ও তিনটি বাণিজ্যিক জাহাজের সমন্বয়ে বড় ধরনের উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়।
গ্রিক কোস্টগার্ডের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে বাংলাদেশ, মিশর, পাকিস্তান ছাড়াও ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছেন। আপাতত তাদের ক্রিট দ্বীপের রেথিমনো শহরের একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
প্রসঙ্গত, ইউরোপগামী অভিবাসীদের জন্য গ্রিস একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট দেশে পরিণত হয়েছে। আফ্রিকার উপকূলের কাছাকাছি ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ ক্রিট ও গাভদোসে গত এক বছরে অভিবাসীবাহী নৌকার সংখ্যা আবারও বেড়েছে। বিশেষ করে লিবিয়া থেকে ছেড়ে আসা নৌকাগুলো এই রুট ব্যবহার করছে। তবে এই পথে নিয়মিতই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছেন প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী। এর মধ্যে ইতালিতে পৌঁছেছেন অন্তত ৬৪ হাজার এবং গ্রিসে পৌঁছেছেন প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ।
এদিকে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন অভিবাসন চুক্তি কার্যকর হবে। নতুন এই ব্যবস্থার আওতায় যাদের আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হবে, তাদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সূত্র: রয়টার্স, ইনফোমাইগ্রেন্টস


