বিদেশি দক্ষ শ্রমিকদের যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ দেওয়া এইচ-১বি ভিসা প্রোগ্রাম পুরোপুরি তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেলার গ্রিন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এই ভিসাকে সমর্থন জানানো মাত্রই গ্রিন ঘোষণা দেন- অত্যন্ত দ্রুতই কংগ্রেসে এ বিষয়ে একটি বিল উত্থাপন করা হবে।
ট্রাম্প বলেছিলেন, আমেরিকায় দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে, তাই সীমিত আকারে বিদেশি প্রতিভাবান কর্মী আনা যুক্তিযুক্ত। কিন্তু এর সম্পূর্ণ বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন গ্রিন। তার কথায়, “আমেরিকানরাই বিশ্বের সবচেয়ে মেধাবি জনগোষ্ঠী।” তাই বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন নেই।
গ্রিন দাবি করেন, এক সময় অস্থায়ীভাবে দক্ষ কর্মী আনার জন্য ব্যবহৃত এইচ-১বি ভিসা এখন ‘দুর্নীতি’র হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও স্বাস্থ্যখাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো কম খরচে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করছে, ফলে স্থানীয় আমেরিকানদের চাকরির সুযোগ কমছে। তার মতে, এই ভিসা প্রোগ্রাম ‘অপব্যবহারের’ মাধ্যমে আমেরিকার শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এক সাক্ষাৎকারে গ্রিন বলেন, “আমি আমেরিকানদের ওপরই সম্পূর্ণ আস্থা রাখি। আমার অগ্রাধিকার সবসময়ই দেশের মানুষ।” তার দাবি, নতুন বিলের মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থাকে ধাপে ধাপে পুরোপুরি বাতিল করা হবে।
তবে কিছু পেশাজীবী এ ক্ষেত্রে ছাড় পেতে পারেন- যেমন চিকিৎসক, নার্স বা জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত দক্ষ ব্যক্তিরা, যাদের কাজ সরাসরি মানুষের জীবন বাঁচানোর সঙ্গে যুক্ত। গ্রিনের প্রস্তাবে প্রতি বছর ১০ হাজার বিদেশি স্বাস্থ্যসেবা–সম্পর্কিত কর্মীকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। তবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে এই সংখ্যাও কমিয়ে আনা হবে বলে তার পরিকল্পনা।
গ্রিনের বিশ্বাস, এই সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক আমেরিকান চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষিত হয়ে উঠবেন, ফলে “বাইরের মেধার” প্রয়োজন আর থাকবে না।
এই বিলের ঘোষণায় মার্কিন অভিবাসন নীতিতে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, প্রস্তাবটি মার্কিন অর্থনীতি ও প্রযুক্তিখাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে গ্রিন মনে করছেন, এটিই আমেরিকান শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার সঠিক পথ।


