মেহেরপুরে বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। এতে প্রতিনিয়ত দাম কমছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের; তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, এখনো বেশির ভাগ সবজির দাম রয়ে গেছে নাগালের বাইরে। অন্যদিকে কৃষকরা বলছেন, দাম আরও কমলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে মেহেরপুর বড়বাজার সংলগ্ন কাঁচাবাজার আড়ত ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি নিয়ে বাজারে আসছেন কৃষকরা। প্রতিদিন প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাঁচামাল আমদানি ও বিক্রি হয় এই আড়তে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে শীতকালীন সবজির দাম কেজিতে কমেছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে ফুলকপি কেজিপ্রতি ৯০ টাকা (আগে ছিল ১১০ টাকা), শিম ১০০ টাকা, পাতাকপি ৭০ টাকা, পালং শাক ৬০–৮০ টাকা এবং বরবটি, ঢ্যাঁড়স ও শসা ৪০–৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পটল, লাল শাক ও বেগুন ৩০–৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে আলু, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া ও মসলাজাতীয় সবজির দাম।
ক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি বাজারে দাম কমলেও খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে সবজি। ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে শীতকালীন সবজি কেনা এখনো ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বড়বাজার কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ীদের সংগঠন তহবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, “বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ছে। সরবরাহ আরও বাড়লে দাম স্বাভাবিকভাবেই কমে আসবে। তবে বর্তমানে দাম কমায় অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়ছেন।”
অন্যদিকে কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমে বর্ষার প্রভাবে অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া সার, কীটনাশক ও দিনমজুরের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচও বেশি। ফলে দাম কমতে থাকলে তাদের লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।
এক কৃষক বলেন, “উৎপাদনে অনেক খরচ হচ্ছে, কিন্তু বাজারে দাম কমে যাচ্ছে। যদি এমনভাবে দাম পড়তে থাকে, তাহলে লাভ তো দূরের কথা-খরচই উঠবে না।”
আড়ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুম গড়ালে এবং শীতকালীন সবজির চাষ ও সরবরাহ বাড়লে বাজারে দাম আরও কিছুটা কমে আসবে। তবে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বাজারে নজরদারির দাবি উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।


