চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৪ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি আশা করছে, ২০২৭ সালের মধ্যে এই প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হবে। তবে বাংলাদেশের কর্মসংস্থান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উন্নয়ন সহযোগী এই সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীতে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ আপডেট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে নানা ব্যাঘাতের পরও পরবর্তী প্রান্তিকগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বহিরাগত খাতের চাপ কমেছে, রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়েছে এবং মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
তবে বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এখনও উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। বেসরকারি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি তীব্রভাবে কমে গেছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি স্থবির হয়ে পড়েছে এবং ব্যাংকিং খাতে অনাদায়ী ঋণ (NPL) বেড়েছে। এছাড়া রাজস্ব আদায় এখনও দুর্বল, যা অর্থনৈতিক গতি পুনরুদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করছে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, চলতি অর্থবছরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, উচ্চ সুদের হার এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে। গণ-আন্দোলনের প্রভাবে প্রথম প্রান্তিকে বড় ধাক্কা খেয়ে পুরো অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে ৪.২ শতাংশ থেকে ৪.০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, বিনিয়োগ স্থবির হয়ে পড়ায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ২২ বছরের মধ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে এবং মূলধনি পণ্যের আমদানি কমেছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ব্যবসা পরিচালনার উচ্চ ব্যয়ের কারণে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি নিতে আগ্রহী নন।
সংস্থাটি বলছে, আর্থিক খাতে সংস্কার, রাজস্ব আহরণে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা গেলে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি আবারও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। সেক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিও ধীরে ধীরে ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।


